সবজির দাম কম, উৎপাদন খরচ উঠছে না কৃষকের

কয়েকদিনের ব্যবধানে বগুড়ায় শীতকালীন কাঁচা শাকসবজির দাম পড়ে গেছে। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি বিশেষ করে আলুর খরচ তুলতে পারছেন না। দাম কমে যাওয়ায় কৃষক যেমন সংকটে পড়েছেন তেমনি পাইকারি ক্রেতা এবং বিক্রেতারা পড়েছেন বিপাকে। তবে ক্রেতারা কম দামে কিনতে পেরে খুশি।

বৃহস্পতিবার বগুড়ার কাঁচা শাকসবজির সর্ববৃহৎ মহাস্থান হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলু, বেগুন, কপি, শিমসহ সব ধরনের সবজির দাম অনেক কমে গেছে। কৃষকরা তাদের উৎপাদন খরচ তুলতে পারছেন না। দাম আরও কমলে তাদের পথে বসতে হবে বলে জানিয়েছেন।

এ হাটের পাইকারি সবজি ব্যবসায়ী বাদশা মিয়া জানান, গত ১০-১২ দিনের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম কমে গেছে। প্রতি মণে ৫০ থেকে ৪০০ টাকা কমেছে। আগে প্রতিমণ কপি ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও বৃহস্পতিবার অর্ধেক দামে বিক্রি হয়। ৩৫০ টাকা মণের গ্রানালু আলু ২৮০ টাকা ও ৫০০ টাকা মণের গুটি পাকারি আলু ৪০০ টাকায় পাওয়া গেছে। বাজারে নতুন আসা ডায়মন্ড আলু প্রতিমণ ৪০০ টাকা বিক্রি হয়। ১ হাজার টাকা মণের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে। ৮০০ টাকা মণের গাজর ৪০০ টাকায় নেমে এসেছে। ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা মণের সিম পাওয়া যাচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। কাঁচা মরিচ আগে প্রতি মণ এক হাজার ২০০ টাকা থাকলেও এখন ৮০০ টাকা। বাজারে নতুন আসা মেটে লাউ প্রতি পিস ওজনভেদে ৩০ থেকে ১০০ টাকা পিস দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে দর কিছুটা বেশি।

বাদশা মিয়া আরও জানান, বগুড়ায় প্রতি বিঘা জমিতে জাত ভেদে ৬০ থেকে ৯০ মণ আলু পাওয়া যায়। বর্তমানে সবজি বিশেষ করে আলু যে দরে বিক্রি হচ্ছে তাতে কৃষকদের উৎপাদন খরচ উঠছে। দর আরও পড়ে গেলে তাদের বেশি লোকসান গুণতে হবে।

মহাস্থানগড় এলাকার কৃষক আবদুল হান্নান জানান, তিনি গরু বিক্রি করে এবার দেড় বিঘা জমিতে আলুর আবাদ করেছিলেন। কিন্তু গত কয়েকদিন দাম পড়ে যাওয়ায় তাকে লোকসান গুণতে হচ্ছে। তাই তিনি আর গরু কিনতে পারছেন না। গাবতলীর রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের কৃষক আবদুর রাজ্জাক জানান, তিনি এবার এক বিঘা জমিতে কপি ও দেড় বিঘায় পাকরি আলুর চাষ করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে বাজার দর কম হওয়ায় তিনি লোকসান গুণছেন।

মহাস্থান বাজারে আলু, বেগুন, সিম বিক্রি করতে আসা কৃষক এমরান, কপি বিক্রেতা পীরগাছার মোতাহার, বেগুন বিক্রেতা লাহিড়িপাড়ার হামেদুল ইসলাম ও মরিচ বিক্রেতা গাবতলীর বাইগুণি আসাদুল জানান, কয়েকদিন আগেও সবজির দাম চড়া ছিল। তখন সবজি বিক্রি করে তারা লাভবান হয়েছেন।

গত ১০-১২ দিন ধরে দাম কমতে থাকায় এখন তাদের লোকসান হচ্ছে। তবে কোনও কোনও সবজির উৎপাদন খরচ উঠছে। দাম আরও কমে গেলে তাদের লোকসান হবে।

 

/এসটি/