যৌনকর্মীকে হত্যার বর্ণনা দিলেন কৃষক

বগুড়ার আদমদীঘিতে যৌনকর্মী নারীকে (৪০) হত্যার দায় স্বীকার করেছেন কৃষক আবু জিহাদ ওরফে জিয়াদ মিয়া (৪৫)। ওই নারী বেশি টাকা দাবি করায় এই কৃষক তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এসব কথা জানান আসামি আবু জিহাদ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদমদীঘি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) জিল্লুর রহমান জানান, স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর আদালত তাকে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই নারী বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার এক প্রতিবন্ধীর স্ত্রী ছিলেন। কলহের জেরে তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর তিনি বগুড়া শহরের বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করেন। আসামি আবু জিহাদ কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার পূর্ব মাচবান্দা (পাত্রকাতা হাজিপাড়া) এলাকার বেলাল হোসেনের ছেলে। নিজ এলাকায় তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা থাকায় তিনি বগুড়ার আদমদীঘির মুরইল বাজারে ভগ্নিপতি সালাউদ্দিনের বাড়িতে বসবাস করতেন। ২-৩ মাস আগে তার সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় ও সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

তার ডাকে ওই নারী গত ২৭ জুলাই রাতে আদমদীঘির শাওইল উত্তরপাড়ায় আসেন। গ্রামের নির্জন স্থানে কাজ শেষে দেড় হাজার টাকা দাবি করেন ওই নারী। কিন্তু আবু জিহাদ তাকে মাত্র ৫০০ টাকা দিয়ে বিদায় করার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ওই নারী ক্ষিপ্ত হয়ে বিষয়টি ভগ্নিপতি সালাউদ্দিনকে বলে দেওয়ার হুমকি দেন। এ অবস্থায় আবু জিহাদ টাকা দেওয়ার নামে কৌশলে ওই নারীকে মুরইল ভাঙা ব্রিজের উত্তর পাশে কোচপুকুরিয়ায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জিহাদ। এরপর তার মাথা জমির কাদায় পুঁতে রেখে পালিয়ে যান। পরদিন আদমদীঘি থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

আদমদীঘি থানার ওসি রেজাউল করিম রেজা জানান, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে থানায় অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যায় জড়িত আবু জিহাদকে শনাক্ত করা হয়। অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে আদমদীঘির মুরইল বাজার এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করে সব বর্ণনা দেন জিহাদ। বিকালে তাকে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদমদীঘির আমলি আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে সন্ধ্যায় তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাকে বগুড়া কারাগারে পাঠানো হয়।