মাদ্রাসায় জামায়াতের বৈঠকের অভিযোগে সুপারসহ বরখাস্ত ৩

বগুড়ার শিবগঞ্জের মোকামতলার বাঘমারায় মাদ্রাসার কক্ষে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা বৈঠক করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৈঠকের সুযোগ দেওয়ায় মাদ্রাসার সুপারসহ তিন জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার (৩১ আগস্ট) মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বরখাস্তকৃতরা হলেন- শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলায় বাঘমারা দাখিল মাদ্রাসার সুপার হায়দার আলী, সহ-সুপার মিজানুর রহমান ও নৈশপ্রহরী রোমান মিয়া।

অভিযোগে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলার বাঘমারা দাখিল মাদ্রাসার সহ-সুপার মিজানুর রহমান ও নৈশপ্রহরী রোমান মিয়ার সহযোগিতায় একটি কক্ষে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা গোপন বৈঠক করেন। সেখানে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী নির্ধারণ ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়। ঘটনাটি ফাঁস হলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিব্রত হন। তারা বুধবার জরুরি সভা ডাকেন।

সভায় বলা হয়, ওই দিন বিকালে একটি উগ্রপন্থি রাজনৈতিক সংগঠনের শতাধিক সদস্য মাদ্রাসার কক্ষ ব্যবহার করে সেখানে গোপন বৈঠক করেন। সেখানে রাষ্ট্রবিরোধী সিদ্ধান্ত, নাশকতার পরিকল্পনাসহ অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক দলের এমন গোপন বৈঠক রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। তাই ম্যানেজিং কমিটির সভায় সর্বসম্মতিতে সুপারসহ তিন জনকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কেন তাদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা আগামী সাত দিনের মধ্যে সভাপতিকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাঘমারা দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক আতিকুর রহমান বলেন, মাদ্রাসার শিক্ষক কর্মচারীরা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। সাময়িক বরখাস্ত তিন জনের প্রত্যক্ষ মদতে মাদ্রাসার কক্ষ ব্যবহার করে গোপন বৈঠক করা হয়। ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার সহ-সুপার মিজানুর রহমান দাবি করেন, সেখানে জামায়াত বৈঠক করেনি। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভা করেছেন।

শিবগঞ্জ থানার ওসি দিলীপ কুমার দাস জানান, তাদের জানামতে ওই মাদ্রাসার কক্ষে জামায়াতের শ্রমিক সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের বৈঠক হয়। সেখানে নাশকতা বা রাষ্ট্রবিরোধী কোনও বৈঠক হয়েছে কি-না তা জানা নেই। কেউ অভিযোগ বা মামলা দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।