দেড় বছরের সন্তানকে ডোবায় ফেলে হত্যা, বাবা আটক

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় দেড় বছর বয়সী মেয়েকে ডোবায় ফেলে হত্যার অভিযোগে জাকির হোসেন (৪০) নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে উপজেলার কুসুম্বি ইউনিয়নের উঁচুলবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে জাকিরের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ডোবা থেকে শিশু হুমায়রা খাতুনের লাশ উদ্ধার করা হয়। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সাত বছর আগে নন্দীগ্রাম উপজেলার বুড়ইল ইউনিয়নের নামা সিংড়াপাড়া গ্রামের রমজান আলীর মেয়ে রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে ও জাকির হোসেনের বিয়ে হয়। এক বছরের মাথায় একটি কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। তার নাম জান্নাতি খাতুন (৬)। এরপর ছেলে সন্তান প্রত্যাশা করেন জাকির। দেড় বছর আগে আবারও কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। তার নাম রাখা হয় হুমায়রা খাতুন। আবারও মেয়ে হওয়ায় জাকির ক্ষুব্ধ হন। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। মাঝে মাঝে জাকির ও রাবেয়ার ঝগড়া হতো। সোমবার সন্ধ্যায় তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর রাতে খাওয়া শেষে সবাই ঘুমিয়ে পড়েন।

রাবেয়া খাতুন বলেন, ‌‘মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে দেখি আমার ছোট মেয়ে হুমায়রা বিছানায় নেই। এরপর আমার চিৎকারে পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করতে থাকি। এক পর্যায়ে আমি অচেতন হয়ে পড়ি।’

প্রতিবেশীরা জানান, হুমায়রাকে খোঁজাখুঁজির সময় জাকিরের আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। এ সময় সবাই মিলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ঘটনা স্বীকার করে বলেন, ঘুমন্ত অবস্থায় হুমায়রাকে ডোবাতে ফেলে দিয়েছেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভোরে বাড়ির কাছের ডোবা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর স্বজন ও প্রতিবেশীরা জাকিরকে আটকে রেখে থানায় খবর দেন। শেরপুর থানা পুলিশ এসে শিশুর লাশ উদ্ধার এবং জাকিরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খন্দকার জানান, লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। কন্যা সন্তান হওয়া নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে জাকির এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।