পরিবহন ধর্মঘটে অচল বগুড়া

১০ দফা দাবিতে বগুড়াসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট চলছে। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বাস, মিনিবাস ও মাইক্রোবাস চলাচল বন্ধ। জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার ৩৪ রুটে কোনও বাস চলাচল করছে না। এতে সাধারণ মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন।

এর আগে বুধবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। দশ দফা দাবি আদায়ে গত ২৬ নভেম্বর নাটোরের কানাইখালী আরপি কমিউনিটি সেন্টারে রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক যৌথ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাজশাহী বিভাগের আট জেলার সব যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী পরিবহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে দাবিগুলো মেনে নিতে সরকারকে আলমেটাম দেওয়া হয়েছিল।

আজ বগুড়া শহরের বারপুর, মাটিডালি, চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, তিনমাথা ও বনানী মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, কোনও বাস চলাচল করছে না। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বাসগুলো রাখা ছিল। তবে পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল ছিল স্বাভাবিক। বাস বন্ধ থাকায় অনেকে ট্রাকে তাদের গন্তব্যে গেছেন। কেউ কেউ অতিরিক্ত ভাড়ায় অটোরিকশায় গন্তব্যে গেছেন।

দুপুরে শহরের চারমাথা এলাকায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বাসের অপেক্ষায় ছিলেন গাইবান্ধার শ্রমিক ফরিদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘ধান কাটার জন্য এসেছিলাম। নন্দীগ্রামে যাবো, কিন্তু গাড়ি বন্ধ থাকায় সকাল থেকে বসে আছি। অটোরিকশা পাওয়া গেলেও চারগুণ ভাড়া দাবি করছে।’

বগুড়া-২

ব্যক্তিগত জরুরি কাজে নাটোর যাবেন বগুড়া শহরের বৃন্দাবনপাড়ার ব্যবসায়ী মোজাফফর হোসেন। তিনি এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ট্রাক বা অটোরিকশায় উঠতে পারেননি। দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকার রাজশাহীতে বিএনপির সমাবেশ ঠেকাতে কৌশলে গাড়ি বন্ধ করছে। এতে জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’

একই মন্তব্য করেন বগুড়ার গাবতলীর দূর্গাহাটা গ্রামের সিকিউরিটি গার্ড রকিব হোসেন। তার নওগাঁয় কাজে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গাড়ি না পাওয়ায় দীর্ঘক্ষণ চার মাথায় বসে থেকে বাড়িতে ফিরে যান।

বগুড়া জেলা বাস মিনিবাস ও কোচ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রশাসন দাবি পূরণ না করায় ১ ডিসেম্বর সকাল ৬টা থেকে রাজশাহী বিভাগের সব জেলায় বাস, ট্রাক (যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন) চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে। 

সংগঠনটির সভাপতি শাহ মো. আকতারুজ্জামান ডিউক জানান, ঢাকাগামী বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে। এছাড়া রংপুর বিভাগের আট জেলার গাড়িগুলোও বন্ধ থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে জরুরি পণ্য ও অন্যান্য গাড়ি বগুড়ার দ্বিতীয় বাইপাস মহাসড়কে দিয়ে ঢাকাসহ অন্য জেলায় যেতে পারছে।