তুরস্কে ভূমিকম্পে নিখোঁজ বগুড়ার রিংকু, খবর পাওয়ার পর থেকে কাঁদছেন বাবা-মা

তুরস্কে ভূমিকম্পে নিখোঁজ হয়েছেন বগুড়ার গাবতলীর কাগইল গ্রামের শিক্ষার্থী গোলাম সাঈদ রিংকু (২৬)। এখন পর্যন্ত তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি স্বজনরা। তার খোঁজ না পেয়ে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। বাবা-মা ও পরিবারের সদস্যরা তার ফেরার অপেক্ষায়। সন্তান নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর থেকে কাঁদছেন রিংকুর বাবা-মা।

রিংকু নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার বাবা গোলাম রব্বানী ও ছোট ভাই রিফাত হাসান। রিংকু গাবতলী উপজেলার কাগইল ইউনিয়নের দেওনাই গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানীর ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। ২০১১ সালে স্থানীয় কাগইল করুনাকান্ত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর ২০১৩ সালে বগুড়া শহরের আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ২০১৫ সালে বৃত্তি নিয়ে তুরস্কে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান। সর্বশেষ ২০১৮ সালে বাড়িতে এসেছিলেন।

স্বজনরা জানিয়েছেন, রিংকু তুরস্কের কারামানমারাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগ থেকে অনার্স শেষ করেন। মাস্টার্স শেষবর্ষে লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয় একটি কলেজে পার্টটাইম শিক্ষকতা করেন। তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ খাহরামানমারাসে বাস করতেন। তিনি ও তার বন্ধু নূরে আলম যে ভবনে থাকতেন, সেটি ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়েছে। নূরে আলম বের হতে পারলেও এখন পর্যন্ত রিংকুর খোঁজ মেলেনি।

সোমবার সন্ধ্যায় নিখোঁজের বিষয়টি রিংকুর পরিবারকে জানান নূরে আলম।

সাঈদ রিংকুর ভাই রিফাত হাসান ও চাচা হাসান বিন জলিল জানান, ভূমিকম্পের পর থেকে তার সঙ্গে ফোনে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। রিংকু কী অবস্থায় আছেন, জীবিত আছেন নাকি মারা গেছেন, তা জানেন না পরিবারের সদস্যরা।

রিফাত হাসান বলেন, 'মঙ্গলবার দুপুরে তুরস্কে বাংলাদেশ দূতাবাসে ফোন দিয়েছিলাম আমরা। সেখান থেকে রফিকুল ইসলাম নামে এক কর্মকর্তা আমাদের জানিয়েছেন, বিধ্বস্ত ভবনে বসবাসকারী নূরে আলমের সন্ধান পাওয়া গেলেও রিংকু নিখোঁজ রয়েছেন। তারা তার সন্ধান করছেন। খোঁজ পেলে আমাদের জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।'

এদিকে, রিংকু নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকে কান্না থামছে না বাবা-মায়ের। রিংকুর সন্ধান পেতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহায়তা চেয়ে বাবা গোলাম রব্বানী বলেন, 'আমার ছেলে বেঁচে আছে নাকি মারা গেছে জানি না। যেভাবেই হোক ছেলের সন্ধান চাই। আমার বাবাকে আমার কাছে এনে দাও তোমরা।'