কনস্টেবল ও তার স্ত্রীকে মারধর, ৬ খেলোয়াড় এক কোচ কারাগারে

পুলিশ কনস্টেবল ও তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে শেখ কামাল দ্বিতীয় বাংলাদেশ যুব গেমসে অংশ নেওয়া ১২ খেলোয়াড়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার (৫ মার্চ) বিকালে রাজশাহী রেল স্টেশনে এই ঘটনা ঘটেছে। আহত পুলিশ কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়াকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবলের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়া বাদী হয়ে রাজশাহী রেলওয়ে থানায় ১২ খেলোয়াড় ও এক কোচের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এর মধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মামলার পরে তাদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক (জেলা ও দয়রা জজ) মুহা. হাসানুজ্জামানের আদালতে তোলা হয়। এর মধ্যে পাঁচ জনকে তাদের অভিভাকরা মুচলেকা দিলে জামিন দেওয়া হয়। এই পাঁচ জনকে সোমবার (৬ মার্চ) সকাল ১০টায় আদালতে হাজির হওয়ার শর্তে ছাড়া হয়েছে। এ ছাড়া অপর সাত জনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে নিলে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠান।

কারাগারে পাঠানো ছয়জন হলেন আলী আজম (১৯), আকাশ আলী মোহন (২০), রিমি খানম (১৯), পাপিয়া সারোয়ার ওরফে পূর্ণিমা (১৯), মোছা. দিপালী (১৯) ও সাবরিনা আক্তার (১৯)। অন্য পাঁচজনের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। তাঁদের কোচের নাম আহসান কবীর (৪৫)। এদের মধ্যে রমজান ছাড়া বাকি সকলেই  গ্রেফতার হয়েছেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টার ধুমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনে রাজিয়া সুলতানা জয়া তার স্বামী পুলিশ কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে ঢাকা থেকে রাজশাহী উদ্দেশে রওনা দেন। ট্রেনটি রাজশাহী স্টেশনে পৌঁছানোর পর তারা ট্রেন থেকে নামার জন্য দরজার কাছে আসেন। কিন্তু খেলোয়াড়রা জটলা পাকিয়ে দরজা ঘিরে রেখেছিলেন। তাদের সরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু আসামিরা তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এর জের ধরে পুলিশ কনস্টেবল এবং তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা জয়াকে মারধর করেন। তাদের হামলা কনস্টেবল গোলাম কিবরিয়া মুখে আঘাত পান।

এ সময় পুলিশ তার স্ত্রীকেও মারধর করা হয়। তবে কনস্টেবল বেশি আহত হন। তাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে প্রকৃত ঘটনা ভিন্ন ধরনের বলে জানিয়েছেন গ্রেফতাররা।

রাজশাহী রেলওয়ে থানার ওসি গোপাল কুমার জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি একজনকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আসামিরা জাতীয় যুব গেমসে অংশ নিয়ে রাজশাহী ফিরছিলেন। কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটলো- তা তদন্ত করে দেখা হবে। আসামিদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ওয়াহেদুন নবী অনু বলেন, ওরা কোনও ঝামেলায় পড়ে ফোন করলে আমরা যেতাম। যতদূর শুনেছি ওরা নাকি পুলিশকে মেরেছে। পুলিশ রক্তাক্ত হয়েছে। বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় ভেতর ঢুকে গেছে। এখন আমি হস্তক্ষেপ করতে পারি না। সবার সঙ্গে আলাপ করে বিষয়টি দেখব।