র‌্যাবের হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু: নওগাঁয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কমিটি

র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের (৪০) মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল নওগাঁয় বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেছে। তিন দিনের এই তদন্তের শেষ দিন বুধবার (৩১ মে) বেলা ১২টা পর্যন্ত তদন্ত দলের সদস্যরা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, রাজপাড়া থানা, নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতাল, সদর থানাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো পুনরায় পরিদর্শন করেন।

চলতি বছর ২৩ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান নওগাঁর সদর উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহায়ক সুলতানা জেসমিন। বিষয়টি সারা দেশে ব্যাপক আলোচিত হয়।

হাইকোর্টের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ মে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির প্রধান করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খানকে। কমিটি সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং নওগাঁর পুলিশ সুপারের মনোনীত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

এ ঘটনার তদন্ত শেষ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল। দলটি নিহত জেসমিনের ছেলে, ভাই ও মামা, বাড়িওয়ালা, র‌্যাব সদস্য, অন্যান্য কমকর্তা, চিকিৎসক, পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছে। গত সোমবার বিকাল ৩টা থেকে তদন্ত দলের সদস্যরা নওগাঁ সাকিট হাউসে কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খানের নেতৃত্বে তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং উল্লেখিত স্থান পরিদর্শন করেন তদন্ত দলের সদস্যরা। বুধবার বিকালে তদন্তকারী দল ঢাকার উদ্দেশে নওগাঁ ত্যাগ করেন।

এবিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এই বিষয়টির তদন্ত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, র‌্যাব-৫-এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল ২২ মার্চ সকালে অফিসে যাওয়ার সময় জেসমিনকে আটক করে। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে নিয়েই র‌্যাব এ অভিযান চালায়।

এনামুল হকের অভিযোগ, জেসমিন ও আল আমিন নামের এক ব্যক্তি তার (এনামুল) ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্নজনকে। এভাবে তারা প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। আটকের পরের দিন ২৩ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান।