মাটিতে আছড়ে শিশুকন্যা হত্যা, বাবার মৃত্যুদণ্ড

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় শিশুকন্যা রাইয়া খাতুন হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বাবা মনিরুল ইসলাম রঞ্জুকে (২৫) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (২৬ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ আদালতের বিচারক মো. আবুল বাশার মিঞা এই রায় প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত মনিরুল ইসলাম রঞ্জু সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার চৌবিলা পশ্চিমপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে।

সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত দায়রা জজ-২ আদালতের অতিরিক্ত পিপি জেবুন্নেছা (জেবা রহমান) এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মনিরুল ইসলাম রঞ্জু নিজেই তার শিশুসন্তানকে হত্যা করেছেন। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে হাইকোর্টে আপিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার চৌবিলা পশ্চিমপাড়ার আব্দুর রহিমের ছেলে মনিরুল ইসলাম রঞ্জুর সঙ্গে পার্শ্ববর্তী উল্লাপাড়া উপজেলার নজরুল ইসলামের মেয়ে নাজনীন নাহারের সঙ্গে ২০২০ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় মনিরুল ইসলাম তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। এর মধ্যে নাজনীন নাহার একটি কন্যাসন্তান জন্ম দেয়। পারিবারিক বিরোধের কারণে নাজনীন তার বাবার সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করতে শুরু করে। ২০২২ সালের ২৭ মার্চ নাজনীন তার গ্রামের বাড়ি উল্লাপাড়ায় বেড়াতে আসেন। নাজনীনের আসার খবর পেয়ে ২৯ মার্চ মনিরুল আত্মীয়স্বজন নিয়ে তার শ্বশুরবাড়িতে আসে এবং সমঝোতা করে স্ত্রী নাজনীন ও দেড় বছরের শিশুকন্যা রাইয়া খাতুনকে সলঙ্গায় নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। পারিবারিক বিরোধের জেরে ৩০ মার্চ মনিরুল তার শিশুকন্যাকে মাটিতে আছড়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় শিশু রাইয়া খাতুনের নানা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে তিন জনকে আসামি করে সলঙ্গা থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার পর মনিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে র‌্যাব সদস্যরা। পরে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত শেষে মনিরুলকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মামলা চলাকালে ১২ জনের সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আদালত মনিরুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন।