মুক্তিপণ আদায়ের পরও স্কুলছাত্রকে হত্যা, ভাই গ্রেফতার

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে শবে বরাতের রাতে নিখোঁজ স্কুলছাত্র নাসিরুল ইসলাম নাসিমের (১৫) হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি পচন ধরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মুক্তিপণ আদায়ের পরও তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (৪ মার্চ) রাতে পার্শ্ববর্তী গাবতলী উপজেলার নেপালতলী ইউনিয়নের ঈশ্বরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আত্মীয়ের বাড়ির গোয়ালঘরে পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের ফুফাতো ভাই মাদ্রাসাছাত্র এনামুল হককে (১৯) গ্রেফতার করা হয়েছে।

সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, নিহতের বাবার আগের করা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, নিহত নাসিরুল ইসলাম নাসিম বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের ওয়াজেল মণ্ডলের ছেলে। সে ফুলবাড়ি গমির উদ্দিন বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শবে বরাতের রাতে এশার নামাজের পর মোবাইল ফোন নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর নাসিম বাড়ি ফেরেনি। সম্ভাব্য সকল স্থানে ছেলের সন্ধান না পাওয়ায় ওয়াজেল মণ্ডল পরদিন সারিয়াকান্দি থানায় জিডি করেন। পরে মোবাইল ফোনে দুর্বৃত্তরা তাকে জানায়, নাসিমকে অপহরণ করা হয়েছে। এ সময় মুক্তিপণ হিসেবে ৮০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। ছেলেকে ফেরত পেতে ওয়াজেল মণ্ডল বিকাশ নম্বরে ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন।

রবিবার ওই টাকা নিতে এলে সারিয়াকান্দি থানা পুলিশ বিকাশের দোকান থেকে নাসিমকে হত্যায় জড়িত সন্দেহে গাবতলীর নেপালতলী ইউনিয়নের ঈশ্বরপুর পূর্বপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে ফুফাতো ভাই এনামুল হককে আটক করে। তিনি সারিয়াকান্দি সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম শ্রেণির ছাত্র।

জিজ্ঞাসাবাদে এনামুল তার মামাতো ভাই স্কুলছাত্র নাসিমকে অপহরণের পর হত্যার কথা স্বীকার করেন। তার স্বীকারোক্তিতে নিখোঁজের আট দিন পর সোমবার রাত ১০টার দিকে তাদের তালাবদ্ধ বাড়ির গোয়ালঘরে মাটি খুঁড়ে নাসিমের হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি পচন ধরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ সময় বগুড়ার গাবতলী সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নিয়াজ মেহেদী, গাবতলী থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ, সারিয়াকান্দি থানার ওসি রবিউল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে সারিয়াকান্দি থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, মুক্তিপণ আদায় করার আগেই স্কুলছাত্র নাসিমকে হত্যা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের বাবার আগের করা সাধারণ ডায়েরিটি হত্যা ও মরদেহ গুমের মামলা হবে। আপাতত নিহতের ফুফাতো ভাই এনামুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যদের নাম ও পরিচয়সহ অন্যান্য বিষয় প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে।