রাজশাহীতে পদ্মা নদী থেকে ৩ জনের লাশ উদ্ধার

রাজশাহীতে পদ্মা নদী থেকে স্কুলশিক্ষার্থীসহ তিন জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (২১ এপ্রিল) নদীর পৃথক স্থান থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে পবা উপজেলার হাড়ুপুরের নবগঙ্গা ঘাট থেকে দুজনের ও বাঘা উপজেলায় চকরাজাপুর এলাকার খেয়াঘাট থেকে একজনের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুপুর ১টার দিকে গোসলে নেমে পদ্মায় ডুবে যায় দুজন। তারা হলো নগরীর সায়েরগাছা এলাকার বাবু হোসেনের ছেলে বাপ্পি হোসেন (১৬)। সে রাজশাহী কোর্ট একাডেমি স্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। অপরজন মনির হোসেন (২০)। তিনি একই এলাকার শাহিন হোসেনের ছেলে। বিকাল ৪টার দিকে নবগঙ্গা ঘাট থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সামা বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমের কারণে দুপুরে কয়েকজন একসঙ্গে নদীতে গোসলে নামে। এ সময় বাপ্পি ও মনির ডুবে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলে অভিযান চালিয়ে বিকাল ৪টার দিকে দুজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।’

রাজশাহী নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘তাদের লাশ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

অপরদিকে, শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে বাঘার চকরাজাপুরে পদ্মা নদীর খেয়াঘাট এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে ডিঙি নৌকা ডুবে নিখোঁজ হন আসাদ হোসেন (২৫)। রবিবার দুপুর ১টার দিকে খেয়াঘাট থেকে লাশ উদ্ধার করে ফায়াস সার্ভিসের ডুবুরি দল। আসাদ চকরাজাপুরের আশরাফুল ইসলামের ছেলে।

এ বিষয়ে আসাদের মেজো ভাই কায়েস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। পদ্মায় মাছ ধরে সংসার চালাই। শনিবার দুপুরে ভাই মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। রবিবার দুপুরে লাশ বুঝিয়ে দিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।’

রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু সামা বলেন, ‘খবর পাওয়ার পর ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে লাশ উদ্ধারের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।’

চারঘাট নৌ পুলিশের ইনচার্জ এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় বাঘা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। স্বজনদের কোনও অভিযোগ না থাকায় লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়নি।’

এর আগে ১৯ এপ্রিল পদ্মার মুশিদপুর খেয়াঘাটে গোসলে নেমে ডুবে মৃত্যু হয়েছে সিয়াম হোসেন সজিব (১০) নামে এক শিশুর। সে উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের খায়েরহাট গ্রামের সুজন আলীর ছেলে। ১৪ এপ্রিল চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়ার মানিকের চরের পদ্মা নদীর ঘাটে গোসলে নেমে ঝিলিক ও জান্নাতি খাতুন নামে দুই শিশু নিখোঁজ হয়। পরে জান্নাতির লাশ উদ্ধার হলেও ঝিলিককে এখনও পাওয়া যায়নি। জান্নাতি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বাংলা বাজার চর এলাকার আবুল কাশেম মন্ডলের মেয়ে এবং ঝিলিক চুয়াডাঙ্গার জয়দেবপুরের পাটঘাট গ্রামের মনির উদ্দিনের মেয়ে। তাদের আত্মীয় চৌমাদিয়ার মানিকের চরের আবদুল মান্নানের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে এসেছিল তারা।