এবার জজ-ম্যাজিস্ট্রেটের পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি

বগুড়া জেলা ও দায়রা জজ একেএম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামানের অপসারণ ও পদত্যাগের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করেছেন বিচার বিভাগের কর্মচারীরা। পাশাপাশি সদ্য বদলি হওয়া জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বগুড়া বিচার বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, জেলা জজ ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদত্যাগ কিংবা অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। 

এ ছাড়া বৃহস্পতিবার বিকালে বদলি হওয়া জেলা প্রশাসককে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা জজ আদালতের প্রধান হিসাবরক্ষক তরিকুল ইসলাম খোকন, পেশকার তোফায়েল আহম্মেদ, পেশকার আরিফুল ইসলাম, পেশকার আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

তারা জানিয়েছেন, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান তার পেশকার আনোয়ারকে দিয়ে বিভিন্ন মামলার কাজে ঘুষ নিতেন। তিনি প্রকাশ্যে ঘুষ-বাণিজ্যে জড়িত আছেন। মনিরুজ্জামান পত্রিকায় আসামিদের গ্রেফতারি পরোয়ানার বিজ্ঞাপন থেকে ৪০ ভাগ কমিশন নিতেন। ঘুষ-বাণিজ্য গোপন রাখতে অখ্যাত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। এ ছাড়া জেলা জজ ও শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিভিন্ন অন্যায়-অনিয়ম করেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ও অন্যান্য আসামিদের অবৈধভাবে কারাগারে আটকে রেখেছেন। তাদের জামিন দেওয়া হবেনা এমন নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি কর্মচারীদের নানাভাবে হয়রানি করেছেন। তারা সবসময় শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করেছেন। আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাই। এ কারণে জেলা জজ ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদত্যাগ চাই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বগুড়া আদালতের এক বিচারক বলেছেন, ‘জেলা ও দায়রা জজ একেএম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামান শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশ মতো কাজ করেছেন। কখনও স্বাধীনভাবে কাজ করেননি। তারা দুজন বগুড়ায় নানা অপকর্ম করেছেন। ডিসিকে বিভিন্ন নির্বাচনে ব্যবহার করেছেন। যা বিচার বিভাগের জন্য অপমানজনক।’

বগুড়া বিচার বিভাগের কর্মচারীদের কর্মবিরতি ও বিক্ষোভে সমর্থন জানিয়ে বগুড়া অ্যাডভোকেটস বার সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান খান মুক্তা বলেন, ‘জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাদের কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন। বিকল্প হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জালাল উদ্দিন এবং অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুকান্ত সাহা।’

বগুড়ার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (অর্থঋণ) মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবির প্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব গোলাম রব্বানী বগুড়ার জেলা ও দায়রা জজ এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রত্যাহারের আশ্বাস দিয়েছেন।