আন্দোলনে জোড়া পিস্তল চালানো সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে

জোড়া পিস্তল নিয়ে রাজশাহীতে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো শীর্ষ সন্ত্রাসী জহিরুল হক রুবেলকে (৩৫) আরেকটি হত্যা মামলায় আরও ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এর বিচারক ফয়সাল তারেক তার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম হত্যা মামলায় তার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এই মামলায় ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছিলেন।

এর আগে, রুবেলকে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী ও শিবির নেতা আলী রায়হান হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। এই রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার তাকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১-এ তোলে পুলিশ। পরে সাকিব আনজুম হত্যা মামলায় তার রিমান্ড চাওয়া হয়।

আলী রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তাজউদ্দিন বলেন, ‘আমার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রুবেলকে আদালতে হাজির করা হলে সাকিব আনজুম হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শরীফুল ইসলাম তার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট দুপুরে কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা নগরের তালাইমারী মোড় থেকে মিছিল নিয়ে সাহেববাজারের দিকে যেতে থাকেন। এই খবরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যরা রাইফেল, পিস্তল, রিভলবার, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাপাতি, হাঁসুয়া নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের হত্যার উদ্দেশ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সময় যুবলীগ কর্মী জহিরুলসহ অন্যরা সাহেববাজার থেকে আলুপট্টি মোড়ের দিকে আসেন। আলুপট্টি মোড়ে তারা ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ ঘটনায় ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম ঘটনাস্থলেই মারা যান।

রাজশাহীর সাবেক সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের ‘ডান হাত’ রুবেলের বাড়ি নগরীর চণ্ডীপুর এলাকায়। যুবলীগের এই কর্মীকে গত ৫ আগস্ট রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার ওপর দুই হাতে পিস্তল নিয়ে গুলি চালাতে দেখা যায়। ৫ আগস্টের ঘটনায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ দুই শিক্ষার্থী মারা যান। গত ১৩ আগস্ট রাতে কুমিল্লা থেকে রুবেলকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এরপর তাকে রাজশাহীতে আনা হয়।

বৃহস্পতিবার কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রুবেলকে আদালতে নেওয়া এবং বের করার সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা তাকে ঘিরে ধরেন। তারা রুবেলকে লক্ষ্য করে ডিম, ইটপাটকেল ও জুতা নিক্ষেপ শুরু করেন। এ সময় ভিডিও ধারণ করতে গেলে দুই সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। একজনের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়।