বিয়ের দুদিন আগে নিখোঁজ তরুণের লাশ ঝুলছিল গাছে

জয়পুরহাট সদর উপজেলার বম্বু ইউনিয়নের সতিঘাটার ধারকি এলাকায় তুলসীগঙ্গা নদীর পাড়ে বাঁশঝাড়ের গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মাহমুদুল হাসান (২৮) নামে এক তরুণের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। বিয়ের দুদিন আগে মাহমুদুল নিখোঁজ হয়েছিলেন।

মাহমুদুল হাসান আক্কেলপুর উপজলোর রুকিন্দীপুর গ্রামের মৃত মাহবুবুর রহমানের ছেলে। তিনি জেলা শহরের ধানমন্ডি এলাকায় বসবাস করতেন। একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরি করতেন।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, স্থানীয় এক মেয়ের সঙ্গে মাহমুদুল হাসানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবারের সম্মতিতে গত শুক্রবার তার বিয়ের কথা ছিল। বিয়ের দুদিন আগে গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হন। রাত ১১টার পরও বাসায় ফেরেননি। সে সময় মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করে নম্বর বন্ধ পায় পরিবার। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মাহমুদুলের বড় ভাই মেজবাহুর রহমান। সেইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার নিখোঁজের খবর দিয়ে বন্ধু ও স্বজনরা পোস্ট দেন। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে নদীর পাড়ে এক নারী পাতা কুড়াতে গিয়ে গাছে ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মাহমুদুল হাসান

নিহতের বড় ভাই মেজবাহুর রহমান বলেন, ‘নিখোঁজের ঘটনায় আমরা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলাম। অভিযোগের কপি র‌্যাব ক্যাম্পে দেওয়া হলে তারা জিডি করার পরামর্শ দেয়। এরপর আমরা থানায় একটি জিডি করেছি। নিখোঁজ থাকা অবস্থায় তার সর্বশেষ লোকেশন ছিল ধারকি এলাকায়। পরে ওই এলাকায় খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি। আজ সেখানেই লাশ পাওয়া গেলো। আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’

মাহমুদুলের বন্ধু হাসিবুর রহমান বলেন, ‘সাত বছর প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে দুই পরিবারের সম্মতিতে গত শুক্রবার বিয়ে ঠিক হয়েছিল মাহমুদুলের। সে বিয়েতে বন্ধু-বান্ধবদের দাওয়াত করা হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের দুদিন আগে নিখোঁজ হয়। এ কারণে আর বিয়ে হয়নি। আজকে আমরা তার ঝু্লন্ত লাশ পেয়েছি।’

খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ

মাহমুদুলের আরেক বন্ধু শুভ হোসেন বলেন, ‘আমরা বন্ধুর বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এজন্য একটি কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করেছিলাম। ভাড়াও পরিশোধ করেছি। এর মধ্যে হঠাৎ বুধবার সকালে বন্ধু নিখোঁজ হয়ে যায়। আজ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।’

এ ব্যাপারে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ হোসেন বলেন, ‘নিখোঁজের ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার থানায় জিডি হয়। এরপর থেকে আমরা তার সন্ধান করছিলাম। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি। রবিবার দুপুরে খবর পয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে কীভাবে মৃত্যু হয়েছে, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনও বলা যাচ্ছে না।’