বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় রাজশাহীতে ৭৪৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর বেআইনি জনতায় দলবদ্ধ হয়ে পথরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি বর্ষণ, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে জখম, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুকুম দান ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানোর অপরাধে মামলা করা হয়েছে। সিজান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে গত ১২ মে রাজশাহী মহানগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় এই মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মোস্তাক আহমেদ। তিনি বলেন, মামলাটি বর্তমানে তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাদী সিজান রাজশাহী মহানগরের সপুরা পবাপাড়া এলাকার সুলতান সরদার ও রেহেনা পারভিনের ছেলে। মামলায় রাবির সাবেক উপ-উপাচার্য ও বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহাসহ ১৪৮ জনের নাম উল্লেখ ও ৫০০/৬০০ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- রাসিকের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়ারুজ্জামান লিটন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সাবেক এমপি শফিকুর রহমান বাদশাহ’র ছেলে ও রুয়েটের কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান দীপন, রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া এবং রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আমরা আনুমানিক ৫০০ থেকে ৭০০ ছাত্র, শ্রমিক, সাধারণ জনতা গত বছরের ৫ আগস্ট রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ড সংলগ্ন মোড় থেকে স্বৈরাচারী সরকার পতনের নিমিত্তে মিছিল নিয়ে পায়ে হেঁটে রাজশাহী শহরের দিকে রওনা দিই। মিছিলটি দুপুর পৌনে ১টার দিকে বোয়ালিয়া থানাধীন খরবোনা সাঁকো ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ৫ নম্বর আসামি আরমান আলীর কার্যালয়ের সামনে পাকা রাস্তায় পৌঁছালে উল্লেখিত আসামিরাসহ অজ্ঞাত ৫০০ থেকে ৬০০ জন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী সশস্ত্র অবস্থায় দলবদ্ধ ছাত্র-জনতার উপর নির্বিচারে গুলি ছুড়তে থাকে।

হামলার বর্ণনা দিয়ে এজাহারে বলা হয়েছে, এই সময় ৫ নম্বর আসামি আরমান কাউন্সিলরসহ অপর আসামিরা ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাকে পায়ের হাঁটুর নিচে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে এবং বাম হাতের কনুইতে রক্তাক্ত জখম হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, তাৎক্ষণিক ৪০ থেকে ১৪৮নং ও অজ্ঞাত আসামিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমন পীড়ন করার জন্য ছাত্র, শ্রমিক ও সাধারণ জনতার মিছিলকে লক্ষ্য করে বৃষ্টির মতো ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় ও ধারালো অস্ত্র, চাইনিজ কুড়াল, জিআই পাইপ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে শান্তিকামী ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাণ্ডব চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে আমার সহযোগী বন্ধুরা আমাকে রামেক হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ৩১নং (অর্থোসার্জারি বিভাগ) ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। আমার শরীরে ২২টার মতো সেলাই করা হয়।