ধর্মান্তরিত মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী হত্যা: জেএমবি সদস্যের জবানবন্দি

কুড়িগ্রামকুড়িগ্রামে ধর্মান্তরিত খ্রিস্টান মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী হত্যা মামলায় জড়িত গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্য গোলাম রব্বানী কুড়িগ্রাম চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
রবিবার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কুড়িগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাইনুদ্দিনের আদালতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় এই জবানবন্দি দেওয়া হয় বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এমএ ফারুক।
এসআই এমএ ফারুক জানান, গোলাম রব্বানী আদালতে মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া তিন জেএমবির মধ্যে সে না থাকলেও তাদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছে গোলাম রব্বানী। এছাড়াও কারা সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের নামও বলেছে সে।
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ১০ জন জেএমবি সদস্য জড়িত ছিল জানিয়ে তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন এই তদন্তকারী কর্মকর্তা।
জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্য গোলাম রব্বানী রাজারহাট উপজেলার উমর মজিদ ইউনিয়নের ঘুমারু ভীমশীতলা গ্রামের সাইফুল ইসলামের পুত্র এবং রাজারহাট মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। গত ১৫ এপ্রিলের পর থেকে সে আর কলেজে যায়নি। পলাতক অবস্থায় মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে সে নারায়ণগঞ্জের একটি গার্মেন্টে কাজ করছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পলাতক থাকার পর থেকে সে জেএমবির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখেনি বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে ।

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে ডিবি পুলিশের একটি টিম জেএমবি সদস্য গোলাম রব্বানীকে গ্রেফতার করে কুড়িগ্রামে নিয়ে আসে। শুক্রবার (৭ অক্টোবর) তাকে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রবিবার রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে আদালতে হাজির করলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন আদালত।

এনিয়ে এ মামলার ১০ আসামির মধ্যে ৪ জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এর আগে গত ২৮ এপ্রিল আবু নাসের রুবেল (২০) এবং মাহবুব হাসান মিলন (২৮) এবং ২ মে হাসান ফিরোজ (২৩) নামে তিন জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এছাড়া অন্য ৩ আসামি ইতিপূর্বে হোলি আর্টিজানে খায়রুল ইসলাম বাঁধন, শোলাকিয়ার ঘটনার আসামি হিসেবে নান্দাইলে আবু মোকাদিল ওরফে ডন এবং রাজশাহীতে নজরুল ইসলাম ওরফে আবুল বাশীর ওরফে বাইক হাসান পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। বাকি ৩ আসামি এখনও পলাতক রয়েছে।

পুলিশ সুপার মো. তবারক উল্লাহ জানান,হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য গত ২২ মার্চ কুড়িগ্রামের গাড়িয়াল পাড়া এলাকায় সকালে প্রাত ভ্রমনের সময় নিজ বাড়ির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ধর্মান্তরিত খ্রিস্টান মুক্তিযোদ্ধা হোসেন আলীকে। এসময় হত্যাকারীরা ককটেল ফাটিয়ে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়।

/এইচকে/