ব্যস্ত সড়কে মরণফাঁদ নীলফামারীর পারঘাট সেতু

বুড়িখোড়া নদীর ওপর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে পারঘাট সেতুটি

নীলফামারী-ডোমার সড়কে বুড়িখোড়া নদীর ওপর পারঘাট সেতুটি প্রায় এক বছর ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।  বিকল্প রাস্তা না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে এই সেতুর ওপর দিয়েই শত শত ভারী যানবাহন ও যাত্রীরা চলাচল করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্যস্ত সড়কে অচল সেতুটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

সড়কটি দিয়ে ডোমার, ডিমলা, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড়, তেঁতুলিয়া, বাংলাবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, বোদাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শতাধিক যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করছে। এদিকে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ দায় সেরেছে সেতুর দুই প্রান্তে শুধু সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েই— এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। যে কোনও সময় সেতুটিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের।

সওজ সূত্র জানান, নীলফামারী সদর উপজেলার কচুয়া নামক স্থানে ওই সেতুটি ২৬ মিটার দীর্ঘ। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় প্রায় এক বছর আগে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিয়ে গতিরোধক দেওয়া হয়। সেতুর ভাঙা রেলিংয়ের স্থানে বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। যাতে করে গাড়ির চালকেরা ঝুঁকিপূর্ণ স্থানটি বুঝতে পারেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর পূর্ব প্রান্তের রেলিং ভেঙে পড়েছে। এটির মধ্যস্থলের পাটাতন ভেঙে গেছে। সেখানে লোহার পাত দেওয়া হয়েছে। সেতুর মাঝখানের মূল খুঁটির গোড়ায় গাঁথুনির ইট খুলে পড়েছে। ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দুই প্রান্তে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে।

উপজেলার কচুয়া গ্রামের আব্দুল মান্নান বাংলা ট্রিবিউনকে, সেতুটি প্রায় এক বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। এখানে গত ছয় মাসে ছোট-বড় অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রায় চার মাস আগে ঢাকা থেকে ডোমারগামী একটি নাইট কোচ সেতুর নিচে পড়ে অনেক যাত্রী আহত হয়েছিলেন। তবুও সেতুটি নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেই। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে, এটি সেতু নয় যেন মরণফাঁদ। সচল রাস্তায় অচল ব্রিজ এইটা হতে পারে না।

পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা হয়ে এ পথে মালামাল নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন ট্রাকচালক খোরশেদ আলী। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি জানান, ঠাকুরগাঁও দিনাজপুরের দশ মাইল হয়ে সৈয়দপুর দিয়ে গেলে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা বেশি হয়। দূরত্ব কমাতে নীলফামারীর এই রাস্তাটি ব্যবহার করছেন তিনিসহ আর সব ট্রাকচালক।

একই কথা বলেন বাসচালক রহমান মিয়া। তিনি আরও বলেন, ‘এই পথে নীলফামারী হয়ে ডোমার, ডিমলা, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড়, তেঁতুলিয়া, বাংলাবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, বোদাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাজারও যানবাহন প্রতিদিন আসা-যাওয়া করে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি পারাপারে ভয়ের মধ্যে থাকি।’

সওজ নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম হামিদুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সেতুটি সংস্কারের আর উপযোগী নয়। এটি এখন ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। নির্মাণে প্রয়োজন হবে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। প্রায় পাঁচ মাস আগে মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এখনও অনুমোদন পাওয়া যায়নি।’

/এইচকে/