চার সপ্তাহ ধরে সোনাহাট স্থলবন্দরের সঙ্গে দেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

 

কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়কের ভোগদাঙ্গা ইউনিয়নের কুড়ারপাড় এলাকার ভাঙা সড়কবন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট ও ব্রিজ-কালভার্ট এখনও মেরামত না হওয়ায় দুর্ভোগ কাটছে না কুড়িগ্রামবাসীর। কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী পাকা সড়কের চারটি অংশ ভাঙা থাকায় প্রায় চার সপ্তাহ থেকে সোনাহাট স্থলবন্দরের সঙ্গে জেলা সদরসহ সারা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার প্রায় আট লাখ মানুষ দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সড়ক পথে যোগাযোগ করতে পারছে না বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা।

সেনাহাট স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী শাহিন আহমেদ ও মমিনুল ইসলাম জানান, জেলা সদরসহ সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি বন্ধ থাকায় স্থলবন্দরের সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ীদের লোকসানে পড়তে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে কোনও ভারী যানবাহন এই সড়কে চলাচল করতে পারছে না। ফলে প্রতিদিন ভারত থেকে আসা প্রায় শতাধিক পাথরবোঝাই ট্রাক দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাথর সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে বন্ধ হয়ে পড়েছে স্থলবন্দরটি।

এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল বরকত মো. খুরশীদ আলম জানান, এই সড়কের চারটি অংশের প্রায় দুইশ’ মিটার জায়গা ধসে গেছে। এর মধ্যে ছোট দুইটি ভাঙা অংশ ভরাট করা হয়েছে। বাকি অংশ দুটিতেও বালু ভরাটের কাজ চলছে। আশা করি যত দ্রুত সম্ভব যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করা হবে।ভেঙে পড়ে আছে উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের হাসখাওয়া ব্রিজ

কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়কে যাতায়াতকারীদের অভিযোগ, ‘নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ দীর্ঘদিন ধরে চলাচলের ভোগান্তিতে থাকলেও সড়কটির ভাঙা অংশ মেরামত করা হচ্ছে না। উল্টো এক শ্রেণির সুবিধাভোগী চক্র ওই ভাঙা অংশে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে পথচারীদের কাছ থেকে পারাপার বাবদ পাঁচ টাকা করে আদায় করছে। আবার মোটরসাইকেল কিংবা অটোরিক্সা হলে তাদের কাছে ২০ থেকে ৩০ টাকা আদায় করছে চক্রটি।’

স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘবের ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল আজিজ জানান, এলজিইডি’র আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও ব্রিজ-কালভার্টের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুততম সময়ে সেগুলোর কাজ করা হবে।

উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বন্যায় কুড়িগ্রামের নয় উপজেলার ৭৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬২টি ইউনিয়নই বন্যা কবলিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয় সড়ক জনপথ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের ৪০ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ১৪০ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক ও ২৩টি ব্রিজ-কালভার্ট।