পেঁয়াজ আমদানি বাড়লেও ট্রাক সংকটে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

হিলি বন্দরে পণ্যবোঝাই ট্রাকরমজান উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বেড়েছে। তবে পণ্যবাহী ট্রাক না পাওয়ায় এবং ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন আমদানিকারকরা। ট্রাক সংকটের কারণে সময়মতো পেঁয়াজ পাঠানো যাচ্ছে না। ফলে বন্দরেই পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, ঠিক সময়ে বাজারে পেঁয়াজে সরবরাহ করা গেলে দাম আরেকটু কমতো বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।

হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে প্রতিদিন পেঁয়াজ, চাল, খৈল, পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করা হয়। আমদানি করা এসব পণ্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতে এবং আমদানিকারকদের নিজস্ব গুদামে নিতে দৈনিক ৪০০ ট্রাকের প্রয়োজন।  বর্তমানে মিলছে ২০০-২৫০ ট্রাক। দেড়‘শর মতো ট্রাক সংকট থাকায় সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বন্দর দিয়ে আগে গড়ে প্রতিদিন ২০-২৫ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হতো। বর্তমানে হচ্ছে ৬০-৭০ ট্রাক। আমদানি বেশি হলেও পণ্য পরিবহনের জন্য ট্রাক পাওয়া যাচ্ছে না। আবার যেসব ট্রাক পাওয়া যাচ্ছে সেগুলো বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে। প্রতিটি রুটেই ট্রাক ভাড়া ৬ -৭ হাজার টাকা বেড়ে গেছে।

পাইকাররা জানান, হিলিতে পেঁয়াজ কিনতে এসে ট্রাক না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। যা পাওয়া যাচ্ছে তার ভাড়া অনেক বেশি। ফলে আগে যেখানে প্রতিদিন ৮-১০ ট্রাক পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো সম্ভব হতো, এখন আর সেটি হচ্ছে না। এর একমাত্র কারণ বাংলা ট্রাক সংকট। সময়মতো পেঁয়াজ না পাঠাতে না পারায় বৃষ্টিতে ও গরমে তা নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।  

হিলি বন্দরে পণ্যবোঝাই ট্রাকহিলি স্থলবন্দরের ট্রাক বন্দোবস্তোকারীরা জানান, বোরো ধানের মৌসুম হওয়ায় ট্রাকের চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে ট্রাকের কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। এছাড়াও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে যানজট। আগে একটা ট্রিপ নিয়ে ঢাকায় গেলে দুই দিনের মধ্যে ঘুরে আসা যেতো। যানজটের কারণে এখন তিন-চার দিনের মতো সময় লাগছে। এ কারণেও ট্রাকের সংকট এবং ভাড়া বেড়েছে।  আর চট্টগ্রাম রুটের কথা তো বলাই যাবে না। ওই রুটে এত যানজট যে কারণে চালকরা সেদিকে যেতেই চাইছে না। এছাড়া সড়কে পুলিশ ও শ্রমিকের চাঁদাবাজি তো রয়েছেই।

পেঁয়াজ আমদানিকারক বাবলু রহমান ও হারুন উর রশীদ হারুন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ব্যাপকহারে পেঁয়াজ আমদানি হলেও তা পরিবহনের জন্য ট্রাক সংকট আছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আমরা পেঁয়াজ পাঠাই। ট্রাক না পাওয়ায় তা করতে পারছি না। এছাড়া ভাড়াও বেড়েছে। আগে চট্টগ্রাম রুটে আগে ট্রাক ভাড়া ছিল ২৮-৩০ হাজার টাকা। তা এখন বেড়ে ৩৬ হাজার টাকা হয়েছে। পেঁয়াজের দাম কমলেও ট্রাক ভাড়ার প্রভাব পড়ছে পেঁয়াজের ওপর। ট্রাক সংকটের কারণে মোকামে ঠিকমতো মাল লোড করতেও পারছি না।’

তারা আরও বলেন, সড়কে যানজটের কারণে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে। আগে যেখানে ঢাকা-চট্টগ্রামে এক-দুই দিনে মাল পাঠানো যেতো, এখন সেখানে তিন-চার দিন সময় লাগছে। ট্রাকের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে বাজারে পেঁয়াজের দাম আরেকটু কমতো।

আরও পড়ুন:

ক্রেতার হুড়োহুড়িতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম