কুড়িগ্রামের দুটি উপজেলায় বন্য হাতির তাণ্ডবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

৪৩

কুড়িগ্রামের রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ১০টি গ্রামে ভারতীয় বন্য হাতির তাণ্ডবে অতিষ্ট ওই এলাকার কৃষক। ক্ষেতের ফসল নষ্ট করাসহ বাড়িতে হামলার ভয়ে আতঙ্কিত মানুষ রাত জেগে আগুন জ্বালিয়ে, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে সময় কাটাচ্ছে।  ১৯ মে সন্ধ্যা থেকে ২০ মে ভোর রাত পর্যন্ত ভারতীয় বন্য হাতির দল সীমান্ত এলাকার আধা পাকা ও পাকা বোরো ধান ক্ষেতে তাণ্ডব চালিয়েছে। এর ফলে রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার প্রায় ১২ একর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রাজিবপুরের বালিয়ামারী সীমান্তের আর্ন্তজাতিক মেইন সীমান্ত পিলার ১০৭৩ ও ভারতের কালাইয়ের চর এবং বালিয়ামারী বর্ডার হাটের দক্ষিণ পাশ দিয়ে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ৩০- ৩৫টি বন্য হাতির একটি দল বাংলাদেশে ঢুকে। পরে হাতির দলটি রৌমারীর আর্ন্তজাতিক মেইন সীমান্ত পিলার ১০৭০ থেকে ১০৭৩ পর্যন্ত বকবান্ধা, খেওয়ারচর, আলগার চর, লাঠিয়াল ডাঙ্গা, পাহাড়তলী, রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারী বাজার পাড়া, আদর্শগ্রাম, ব্যাপারি পাড়া, জালচিড়া পাড়া, মিয়াপাড়া এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাণ্ডব চালিয়ে প্রায় ১২ একর ইরি-বোরো ধানের ক্ষতি করেছে। এসময় গ্রামবাসীরা সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত জেগে থেকে আগুন জ্বালিয়ে ও ঢাকঢোল পিটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা চালায়। পরে ভোর রাতে হাতির দলটি যে পথ দিয়ে এসেছিল সে পথ দিয়েই ফিরে যায়।

বালিয়ামারী ব্যাপারি পাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ফরিজল হক জানান, ৩০/৩৫টি বন্য হাতি  ভারতের কালাইয়ের চর ও বালিয়ামারী বর্ডার হাটের দক্ষিণ পাশ দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়লে সীমান্তবাসীরা জড়ো হয়ে তাদের উঠতি ফসলের ইরি/বোরো ধান ক্ষেত রক্ষার জন্য চিৎকার, পটকা ও আগুন জ্বালিয়ে ফসল রক্ষার চেষ্টা চালায়।

একই গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ জানান, আমি গরীব মানুষ কষ্ট করে ১ একর জমিতে ইরি ধান চাষ করেছি। বন্য হাতির দল আমার পাকা ধান ক্ষেতের অর্ধেক নষ্ট করে ফেলেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ গত বছরও ভারতীয় হাতি বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে ঢুকে ফসল ও ঘরবাড়িরের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

রৌমার উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপঙ্কর রায় বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’