ঈদে রংপুরে দেখা যায়নি এমপিদের, হতাশ নেতাকর্মীরা

রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেনপবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রংপুরে দুজন নেতা ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির বড় বড় নেতারা ছিলেন অনুপস্থিত। েএছাড়া বিএনপির কোনও নেতাকেও ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়নি। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এমপিদের নির্বাচনি এলাকায় অনুপস্থিতি আসন্ন নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

তবে জামায়াত গোপনে তাদের দলের তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে পাঞ্জাবি আর সেমাই, চিনি উপহার হিসেবে প্রদান করেছে।

রংপুর ১ আসনের এমপি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি মশিয়ার রহমান রাঙ্গা ঈদের আগে থেকে গঙ্গাচড়া উপজেলা সদরে অবস্থান করেছেন। তিনি ঈদের দিন শনিবার সকালে উপজেলা সদরে ঈদের নামাজ আদায় করে মুসল্লীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। এছাড়া দিনভর নির্বাচনি এলাকায় গঙ্গাচড়াসহ আশপাশের এলাকায় গিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। সেই সঙ্গে রংপুর সিটি করপোরেশনের ৮টি ওয়ার্ড এবার রংপুর ১ আসনের সঙ্গে নতুন করে সংপৃক্ত হওয়ায় ওই এলাকাগুলোতে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন তিনি। এসময় স্থানীয় নেতারা সঙ্গে ছিলেন।

তবে রংপুর ১ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কোনও নেতাকে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়নি।

তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ যদি এককভাবে নির্বাচন করে তাহলে সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগাম প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ সুযোগ কোনও কাজে লাগাতে পারলো ন। গজঘন্টা এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা মোকসেদ আলী বলেন, ‘মনোনয়ন চাওয়ার সময় ৪/৫ জন নেতাকে সরব দেখা যায় কিন্তু সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা না করে লাভ কী?’

02রংপুর ২ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের ডিউক চৌধুরী । তিনি শনিবার সকালে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন নিজের গ্রামের বাড়ি বিষ্ণপুর এলাকায়। দুপুর পর্যন্ত ওই এলাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন তিনি। সবার কাছে তিনি দোয়াও চেয়েছেন সেই সঙ্গে ভোটও চেয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে চাইলেও সাবেক জাপা এমপি মোহাম্মদ আলী সরকারের কোনও তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি। তাকে সারাদিন বাসায় অবস্থান করতে দেখা গেছে।

অপরদিকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন প্রত্যাশি সাবলু চৌধুরী নিজের এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বলে জানা গেছে। তবে জামাতের কোনও নেতাকে সেখানে দেখা যায়নি।

রংপুর সদর ৩ আসনের এমপি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। তিনি সাধারণত ঈদুল ফিতর ঢাকায় উদযাপন করেন সে কারণে আসেননি। তবে তার পক্ষে রংপুর সিটি মেয়র ও মহানগর জাপা সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ঈদের নামাজ শেষে দলের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।

অপরদিকে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশি দলের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য চৌধুরী খালেকুজ্জামান এবার ঈদ উদযাপন করতে রংপুরে আসেননি। তিনি ঢাকাতেই অবস্থান করছেন।

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘তার মেয়ে বিদেশ থেকে ঈদ উদযাপন করতে এসেছে তাই এবার যাওয়া হয়নি। তবে যেকোনও দিন রংপুরে আসবেন বলে জানান।’

অন্যদিকে বিএনপির কোনও নেতাকে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়নি। তবে জামায়াতের পক্ষে দলের সমর্থক ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে গোপনে পাঞ্জাবি ও সেমাইসহ বিভিন্ন সামগ্রী দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে মহানগর জামায়াতের এক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব আমরা বিশেষ করে ঈদের সময় করে থাকি। এর বাইরে তিনি আর কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।


রংপুর ৪ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক টিপু মুন্সি। তিনি এবার ঈদ উদযাপন করতে তার নির্বাচনি এলাকায় আসেননি। তবে স্থানীয় নেতারা বলেছেন, কিছুদিন আগেই তিনি নির্বাচনি এলাকায় ঘুরে গেছেন। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী সেলিম বেঙ্গল সকালে হারাগাছে নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করে দিনভর বিভিন্ন এলাকায় এলাকায় গণসংযোগ করেছেন বলে জানা গেছে। বিএনপির কোনও নেতাকে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা যায়নি।

রংপুর ৫ আসনের এমপি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোষাধাক্ষ্য এইচ এন আশিকুর রহমান। তিনি এবার ঈদ উদযাপন করতে তার নির্বাচনি এলাকায় আসেননি। তবে এ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ছিলেন বেশ সরব। তিনি শঠিবাড়িতে নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করে দিনভর বিভিন্ন এলাকা সফর করে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন বলে জানা গেছে।

তবে জামায়াতের প্রকাশ্য কোনও তৎপরতা লক্ষ্য করা না গেলেও তারা গোপনে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন বলে জানা গেছে। তবে এই আসনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী ফকরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর এবার ঈদ উদযাপন করতে এলাকায় আসেননি। তবে দলের একটি সূত্রে জানা গেছে, আগামী মঙ্গলবার তিনি তার এলাকায় আসবেন।

রংপুর ৬ আসনের এমপি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী এবার ঈদ উদযাপন করতে আসেননি। তবে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেছেন, কয়েকদিন আগেই তিনি নির্বাচনি এলাকা ঘুরে গেছেন। তবে এ আসনে বিএনপি বা জাতীয় পার্টির কোনও নেতাকে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়সহ কোনও কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা যায়নি।