শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় হিলিতে চাল আমদানি বন্ধ, বাড়ছে দাম

হিলি বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকা চালের ট্রাকশুল্ক বেড়ে যাওয়ায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। আর শুল্ক সংক্রান্ত জটিলায় ঈদের আগে আসা চালও বন্দর থেকে খালাস করতে পারেননি তারা।  ফলে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় এরই মধ্যে হিলিতে চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। প্রতিকেজি চালের দাম ৪-৫ টাকা বেড়েছে বলে জানা গেছে। আমদানি বন্ধ থাকলে দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে বিদেশ থেকে চাল আমদানিতে মাত্র ২ শতাংশ শুল্ক দিতে হতো। বাজেটে সেই শুল্ক বাড়িয়ে ২৮ শতাংশ করা হয়েছে। আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ৭ জুনের পর থেকে হিলি দিয়ে এক প্রকার চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।

হিলি বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকা চালের ট্রাকহিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, চাল আমদানিতে দুই ভাগ শুল্ক আরোপ থাকাকালীন বন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৭০-৮০ ট্রাক করে চাল আমদানি হতো। চলতি অর্থবছরের বাজেটে চাল আমদানিতে শুল্ক ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৮ শতাংশ করায় ৭ জুন থেকে হিলি বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শূন্যের কোটায় এসে দাঁড়িয়েছে।

এ প্রসঙ্গে চাল আমদানিকারক মামুনুর রশীদ লেবু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শুল্ক বৃদ্ধি করায় এখন ভারত থেকে চাল আমদানিতে আমাদের প্রতিকেজিতে খরচ পড়বে  ৪৫ টাকার ওপরে। লাভ করতে গেলে আমাদের আরও বেশি দামে বিক্রি করতে হবে। এতে আমাদের পরতা হবে না। তাই চাল আমদানি একেবারে বন্ধ রেখেছি। এভাবে চললে বাজারে চালের দাম বাড়তে পারে। চাল আমদানিতে শুল্ক বাড়ায় মিলাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’

হিলি বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকা চালের ট্রাকচাল আমদানিকারক রেজাউল ইসলাম জানান,৫ ও ৬ জুন ৩৪৭টি ট্রাকে ১২ হাজার টন চাল আমদানি করা হয়। ৬ জুন বিকাল পর্যন্ত ২ শতাংশ শুল্ক দিয়ে ৪ হাজার টন চাল খালাস করা গেছে। ৭ জুন বাজেট ঘোষণার পর কাস্টমসের সার্ভার বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে কম শুল্কে আমদানি করা ৮ হাজার টন চাল আটকা পড়ে যায়। এখন চাল খালাস করতে হলে ২৮ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। বাজেটের আগেই এসব চাল আমদানি করা হয়েছে এবং সব শুল্ক পরিশোধ করাও হয়েছে। কিন্তু কাস্টমসের ব্যর্থতার কারণে আমরা তা খালাস করতে পারেনি। আগের ২ ভাগ শুল্কে চালগুলো ছাড় দেওয়ার জন্য কাস্টমস ও এনবিআরের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তবে কাস্টমস কোনও সিন্ধান্ত না দেওয়ায় বন্দর থেকে চালগুলো খালাস করা যাচ্ছে না।

হিলি বাজারে চাল কিনতে আসা রিকশাচালক মোস্তাকিম হোসেন ও আনারুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, দু’সপ্তাহ আগে যেখানে আমরা প্রতিকেজি স্বর্ণা চাল কিনেছি ৩৫-৩৬ টাকা কেজি দরে। এখন সেই চালের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০-৪১ টাকায়। চালের দাম এভাবে বাড়লে গরিবেরা কীভাবে চাল কিনে খাবো? চালের দাম বাড়ছে কিন্তু আমাদের আয় বাড়ছে না। সারাদিন যা আয় করি তার সব দিয়ে যদি চাল কিনতে হয় তাহলে আর বাকি জিনিসপত্র কিনবো কী করে?’