আমদানি বেশি, তারপরও চড়া পেঁয়াজের বাজার

03কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে চাহিদা মেটানোর জন্য বন্দর দিয়ে বেড়েছে পেঁয়াজের আমদানি। কিন্তু তারপরেও কমছে না পেঁয়াজের ঝাঁজ। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পাইকারিতে (ট্রাকসেল) পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৬ টাকা বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২২ টাকা থেকে ২৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। তবে পেঁয়াজের এ দাম বাড়াকে ব্যবসায়ীদের এক ধরনের কারসাজি বলে মন্তব্য করছেন ক্রেতারা।

হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে আগে গড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হলেও এখন পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ থেকে ৭০ ট্রাকে। গত শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার এই ছয় দিনে বন্দর দিয়ে ৩৬৫টি ট্রাকে ৭ হাজার ৩০০ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।

সরেজমিন হিলি স্থলবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বন্দর দিয়ে ভারত থেকে নাসিক ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে।

আর বাংলাহিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। বর্তমানে ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে এসব পেঁয়াজ ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। আর বাজারে দেশি পেঁয়াজ তেমন একটা দেখা যায়নি। দু-এক দোকানে দেখতে পাওয়া গেলেও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৫ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এসব পেঁয়াজ ৪০ টাকা থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।04

হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্রেতারা জানান, গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজ ২০ টাকা থেকে ২২ টাকা কেজি দরে কিনেছি, কয়েক দিনের ব্যবধানে সেই পেঁয়াজ এখন ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এখনও কোরবানি ঈদের কয়েকদিন বাকি আছে। এখনই যদি এমন দাম হয় তাহলে সামনে পেঁয়াজের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে কে জানে।

হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক বাবলুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোরবানির ঈদ এলে দেশের বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে যায়। দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কম ও দাম বাড়তি থাকায় ভারতীয় পেঁয়াজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেই বাড়তি চাহিদা মাথায় রেখে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু ভারতের অভ্যন্তরে পাথরবাহী ট্রাকের কারণে যানজট সৃষ্টি হওয়ায় পেঁয়াজবাহী ট্রাকগুলো সঠিক সময়ে বা সঠিক সংখ্যায় দেশে প্রবেশ করতে পারছে না। আমাদের প্রচুর পরিমাণে পেঁয়াজ ভারতের পার্কিংয়ে আটকা রয়েছে। বন্দর দিয়ে চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ না ঢুকতে পারায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। তবে আশা করছি ভারতের পার্কিংয়ে যানজট কমে আসলে বন্দর দিয়ে ব্যাপক হারে পেঁয়াজ প্রবেশ করবে, সে সময় দাম কমে আসবে।

হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশের বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ায় বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বেড়ে গেছে। আগে যেখানে গড়ে প্রতিদিন বন্দর দিয়ে ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হতো, এখন সেখানে গড়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। আর আমদানিকৃত এসব পেঁয়াজ সব প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে দ্রুত বন্দর থেকে খালাস করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলে যাচ্ছে এসব পেঁয়াজ।