শীতের আগমনে হিলিতে পাড়া মহল্লায় পিঠা বিক্রির ধুম

হিলির হাট-বাজারে পিঠা বিক্রির ধুম

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চেয়ে উত্তরের জনপদ দিনাজপুরের হিলিতে খানিকটা আগে থেকেই শীত পড়তে শুরু করেছে। আর এই শীতের আগমনে সকাল ও বিকেলে দু’বেলা হিলি স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় বসছে ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান। এসব দোকানে দেখা যায় পিঠা প্রেমীদের উপচে পড়া ভিড়। শীতের সকালে ভাপা পিঠা এবং বিকেলে চিতই পিঠা খেতে পিঠা প্রেমীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠে এসব পিঠার দোকান।

উত্তরের জনপদ দিনাজপুরের হিলিসহ এর আশপাশের উপজেলাগুলোতে অনেকটাই শীতের প্রকোপ শুরু হয়েছে। সকালটা ঘন কুয়াশার মাঝ দিয়ে শুরু হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে গরমের প্রকোপ। আবার বিকেল গড়ালেই শরীরে এসে উঁকি দেয় অগ্রায়ণ মাসের শীত। আর এই শীতে গ্রামের মানুষের মজাদার খাবার হলো ভাবা পিঠা, চিতই পিঠা, রস মালাই। কিন্তু কালের ক্রমে এসব পিঠা উৎসব গ্রাম অঞ্চলগুলো থেকে উঠেই গেছে। এসময় গ্রামগুলোতে গোলায় ধানও উঠতে শুরু করেছে। এখন আগের মতো বাসা-বাড়িতে এসব পিঠার আয়োজন না থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে। পিঠার দোকানে ভীড় করছেন ধনী-গরীবসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষ।

পিঠা খেতে আসা মিনহাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘কোনো ঝামেলা ছাড়াই হাতের নাগালে আমরা ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা পাচ্ছি। দাম কম আবার খেতেও বেশ খুব সুস্বাদু। তাই আমি আর আমার বন্ধুরা প্রতিদিন সন্ধ্যায় ও সকালে এসব দোকানে পিঠা খেতে আসি।

বাংলা হিলি পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জুয়েল রানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘আমি প্রতিদিনই সকালে বাড়ি থেকে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় একটা করে ভাপা পিঠা খাই। আমাদের পাঠ্যবইয়ে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠার নাম পড়েছি ও শুনেছি কিন্তু বাসাতে কখনো মা এসব পিঠা তৈরি করেনি। তাই বাজারে পিঠার দোকানে এসে দেখলে লোভ সামলাতে পারি না।’

পিঠা খেতে আসা মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আগের মত বাসায় বাসায় আর পিঠা তৈরি উৎসব হয় না। বাজারে পিঠার দোকান দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না, তাই একটি পিঠা খেলাম। তবে সেই আগের স্বাদ এখন আর পিঠা-পুলিতে নেই।’

হিলি বাজারের পিঠা বিক্রেতা মনোয়ারা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, সকালে কদর বেড়েছে গরম গরম ভাপা পিঠার। আর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় বেড়েছে চিতই পিঠার কদর। শীত পড়ায় আমার দোকানে এসব পিঠাও বিক্রি বেশ ভাল হচ্ছে।

তবে অন্যান্য পিঠা তৈরিতে কিছু ঝামেলা থাকায় এবং চাহিদা কিছুটা কম থাকায়, ভাপা পিঠা বেশি বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২শ টাকার পিঠা বিক্রি করে থাকি। যা পিঠা তৈরির উপকরণসহ অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন ৪শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা লাভ হচ্ছে।