৮০ লাখ টাকার রাস্তার পিচ উঠলো তিন দিনেই!

road-1দিনাজপুর বীরগঞ্জে রাস্তা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ এই রাস্তাটিতে পিচ ঢালাইয়ের তিন দিনের মাথায় তা উঠে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পিচ ঢালাইয়ের সময় সেখানে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হয়েছে। এসব অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ওই রাস্তার কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তবে কাজের সমস্যা থাকলে সেটি সমাধানের কথা জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কর্মকর্তা।

জানা যায়, বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের ঝাড়বাড়ী কলেজ মোড় থেকে কেডিএস বাজার পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার নতুন রাস্তা নির্মাণ চলছে। ৮০ লাখ টাকা ব্যায়ে এই রাস্তার কাজটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন হাবিব হোসেন।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কেডিএস বাজার এলাকায় রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। গত মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে রাস্তায় পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়। ইতিমধ্যেই প্রায় দেড়শ’ মিটার রাস্তায় পিচ ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে এরই মধ্যে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

road-03কেডিএস মোড়ের ভ্যানচালক নজরুল ইসলাম জানান, তিনি এই রাস্তায় সবসময় ভ্যান চালান। তিনি অভিযোগ করেন, এখানে নিম্নমানের কাজ করছে। তিনি দেখেছেন রোলার দিয়ে ঢালাই কাজ হচ্ছে। কিন্তু ঢালাইয়ে ঠিকভাবে পিচসহ যাবতীয় মালামাল দেওয়া হয়নি। যার কারণে পিচ উঠে যাচ্ছে।

আব্দুল মান্নান নামে একজন জানান, রাস্তায় বালু ভালোভাবে দেওয়া হয়নি। আবার রোলার দিয়ে বালু বসানোর নিয়ম থাকলেও মাত্র একবার তা করা হয়েছে। যাতে করে রাস্তার কাজ হলেও বেশিদিন টিকবে না।

এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাস্তার কাজ দেখতে আসেন বীরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ামিন হোসেন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঠিকাদারকে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন।

বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ামিন হোসেন বলেন, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে কাজটি সঠিকভাবে হয়নি। হাত দিয়েই পিচ উঠে যাচ্ছে। তাই কাজটি বন্ধের জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে। স্থানীয় সরকার অধিদফতরের উপ-সহকারী প্রকৌশলীকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।’

road-02এ ঘটনায় স্থানীয় সরকার অধিদফতরের বীরগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কাজের অনেক টেকনিক্যাল বিষয় আছে। কাজ করলে উনিশ-বিষ হতে পারে। সমস্যা থাকলে সেটি সংশোধন করা হবে। স্থানীয়রা কাজের সমস্যার জন্য আমাদের না জানিয়ে ইউএনও সাহেবকে বলেছেন এবং ইউএনও সাহেব কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। কাজ খারাপ হোক এটি আমরাও চাই না। এখন প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে ঠিকাদার হাবিব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি বারবার ফোন কেটে দিয়েছেন।