সৈয়দপুর মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে টাকা ছাড়া সেবা মেলে না

01বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা থাকলেও নীলফামারীর সৈয়দপুরে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (হাসপাতাল) টাকা ছাড়া প্রসবকালীন কোনও সেবা মেলে না রোগীদের। এছাড়া ডেলিভারি রোগীদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। দাবি অনুযায়ী টাকা দেওয়া না হলে রোগীর স্বজনদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়। এতে নিয়মিত হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সৈয়দপুর শহরের চাঁদনগর আলম প্রেস মহল্লার মো. এরশাদের স্ত্রী শাবানার (২২) প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। হাসপাতালে আসার পর শাবানা স্বাভাবিকভাবে (নরমাল ডেলিভারি) সন্তান প্রসব করেন। কিন্তু নার্স নাজমুন নাহার ওই রোগীর কাছ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করেন।
রোগীর ননদ রোজি বেগম বলেন, নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে কেন এত টাকা দিতে হবে প্রশ্ন করলে নার্স নাজমুন নাহার তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন এবং টাকা না দেওয়ায় প্রয়োজনীয় সেবা দিতে গড়িমসি শুরু করেন।
রোগীর লোকজন স্থানীয় মহিলা কাউন্সিলর সাবিহা সুলতানাকে বিষয়টি জানালে তিনি তাৎক্ষণিক হাসপাতালে এসে অতিরিক্ত টাকা চাওয়ার কারণ জানতে চান। তখন নার্স নাজমুন নাহার বলেন, ওষুধ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস বাবদ কিছু টাকা চাওয়া হয়েছে।
এ সময় রোগীর লোকজন তার কথার প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে ঝগড়া লাগে। এতে মহিলা কাউন্সিলর বিষয়টি মীমাংসা করলেও রোগীদের ৫শ’ টাকা দিতে হয়। অথচ এ হাসপাতালে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার কথা।
এ ব্যাপারে নার্স নাজমুন নাহার বলেন, সুতা ও ওষুধপত্র বাবদ রোগীর কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়নি।
মহিলা কাউন্সিলর সাবিহা সুলতানা বলেন, রোগীর কাছ থেকে ২ হাজার ৫শ’ টাকা দাবি করা হয়। পরে ৫শ’ টাকা দিলে রোগী স্বজনদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. জাহেদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নীলফামারী পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের উপ-পরিচালক আফরোজা বেগম বলেন, ‘এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ওই নার্সের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’