হরিপুর সীমান্তে বসেছিল দুই বাংলার মিলনমেলা

01প্রতিবছরের মতো এবারও ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্তে দুই বাংলার মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে এই মেলা। এ মেলায় অনেকের চোখে ছিল আনন্দের অশ্রু। দীর্ঘদিন পর আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে তারা আবেগে আপ্লুত হয়ে ওঠেন। এভাবেই হরিপুর উপজেলার চাপাসা ও রাণীশংকৈল উপজেলার কোচল সীমান্তের মাঝামাঝি কুলিক নদীর তীরে পাথরকালী মেলা উপলক্ষে লাখো মানুষের সমাগমে মিলনমেলায় পরিণত হয় সীমান্ত এলাকা।

শুক্রবার ভোর থেকে হরিপুর সীমান্তে দুই বাংলার মানুষের ঢল নামতে থাকে। অনেক খোজাঁখুঁজির পর নিজের আত্বীয় স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে একটু বুকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছা পোষণ করলেও কাঁটাতারের বেড়ার কারণে উপস্থিত নারী-পুরুষদের সে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। চোখের পানি ফেলে নিকটজনকে কাছে পাওয়ার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন অনেকে। দীর্ঘদিন দূরে থাকা, দেখা না হওয়ায় অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। আবার প্রিয়জনের দেখা না পেয়ে অনেককে চোখের পানি ফেলে বাড়ি ফিরে যেতে হয়।03

বগুড়ার শেরপুর থেকে এসেছেন বোন সাগুফতা রায়। তার ছোটো ভাই সরেন রায় থাকেন ওপারে। বোন নিজ হাতে বানিয়ে এনেছিলেন শীতের পিঠা আর ভাই তার জন্য এনেছিলেন শীতের শাল।

দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থেকে আসা রওশন এলাহী জানান, চাচা ভারতে থাকেন ১০ বছর ধরে। তার সঙ্গে কোনও দেখা না হওয়ায় আজ সপরিবারে তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন।
বগুড়ার গাবতলী থেকে ভাগ্নির সঙ্গে দেখা করতে এসেছেন রানু পাল। তিনি জানান,অনেকদিন পরেই আজ ভাগ্নি ও তার পরিবারের সঙ্গে দেখা হয়েছে। তারা আমাদের বিভিন্ন উপহার দিয়েছে, আমরাও তাদের এ দেশের শাড়িকাপড় দিয়েছি।02

মেলা কমিটির সভাপতি নগেন কুমার পাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতি বছর দুই দেশের মিলনমেলার জন্যই পাথরকালী মেলার আয়োজন করা হয়। দেশ বিভাগের আগে এই এলাকা ছিল ভারতবর্ষের আওতায়। পরবর্তীতে দেশ ভাগ হলে এখানে বসবাসরত বাসিন্দাদের অনেকে ভারতে পড়ে যায়। আর পাথরকালী পূজা অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবছর ডিসেম্বরের প্রথম শুক্রবার। এই একটি দিনে আত্বীয়-স্বজনদের দেখার জন্য এই এলাকার বাসিন্দারা বছরজুড়ে অপেক্ষা করে থাকেন।’