চিনে ফেলায় আইনজীবীকে হত্যা, রতনের স্বীকারোক্তি

রতনচিনে ফেলায় এবং নাম ধরে ডাক দেওয়ায় আইনজীবী আসাদুল হককে গলাকেটে হত্যা করে রতন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে একথা জানিয়েছে সে। রংপুর নগরীর তাজহাট এলাকায় সিনিয়র আইনজীবী আসাদুল হককে হত্যা মামলার প্রধান আসামি রতন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শনিবার (৬ জুন) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সয়েবুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। তাজহাট থানার ওসি রোকনুজ্জামান একথা জানিয়েছেন।

জবানবন্দিতে রতন জানায়, আইনজীবী আসাদুল হকের বাড়ি থেকে মাত্র কয়েশ’ গজ দূরেই তার বাড়ি। আইনজীবীর স্ত্রী ও মেয়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ায় তিনি একা ছিলেন বাসায়। ওই বাড়িতে ডাকাতি করতেই দেয়াল টপকে তারা ভেতরে ঢুকেছিল। শুক্রবার (৫ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে রতন তার সহযোগীদের নিয়ে আসাদুল হকের বাসায় ঢুকে। এসময় তিনি জুমার নামাজ পড়ার জন্য ওজু করছিলেন। আসাদুল হক চিনে ফেলায় তার পেটে ছোরা ঢুকিয়ে দেয় রতন। তিনি মাটিতে পড়ে গেলে রতন ও তার সহযোগীরা তাকে জাপটে ধরে গলা কেটে হত্যা করে। এরপর খুনিরা দেয়াল টপকে পালিয়ে যাওয়ার সময় রতনের হাতে রক্ত মাখা ছোরা দেখে এলাকাবাসী তাকে আটক করে।

ওসি রোকনুজ্জামান জানান, জবানবন্দিতে রতন তার সহযোগীদের নাম বলেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম বলা যাবে না।

পুলিশ ও স্থনীয়রা জানান, নিহত আইনজীবীর দুই মেয়ে। বড় মেয়ে আশা হক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। করোনার জন্য ছোট মেয়েকে নিয়ে স্ত্রী সাবেরা হক শেফালী গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন। আর ধর্মদাস বারো আউলিয়ার ওই বাড়িতে আসাদুল হক ছিলেন।

আসাদুল হকের ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার বিকালে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ধর্মদাস বারো আউলিয়া এলাকায় তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া ছড়ান এলাকায় গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

আসাদুল হক রংপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্য ও সাবেক এপিপি ছিলেন।

আজ রবিবার (৭ জুন) রংপুর আইনজীবী সমিতি জরুরি সভা আহ্বান করেছে। সভায় আসাদুল হকের খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রংপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক।