হাকিমপুর উপজেলার আলিহাট ইউনিয়ন, বোয়ালদাড় ইউনিয়ন, খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন, পৌরসভার প্রায় সব এলাকাতেই ধানক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কৃষকরা বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করে ইঁদুর দমনে কাজ করে যাচ্ছেন।
হিলির জালালপুর গ্রামের কৃষক সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গত বোরো মৌসুমে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় ও আগের ক্ষতি খানিকটা পুষিয়ে নিতে এবং করোনাকালীন সময়ে পরিবারের চালের চাহিদা মেটাতে এবারে আমন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন কৃষকরা। কিন্তু কৃষকের সেই স্বপ্নে হানা দিয়েছে ইঁদুর। আমি নিজেও দশ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি যার মধ্যে ২ বিঘাতে স্বর্ণা ৫ জাতের ধান রোপণ করেছি বাকি ৮ বিঘা জমিতে কাটারি ধান লাগিয়েছি। কিন্তু যে ২বিঘা জমিতে স্বর্ণা ৫ জাতের ধান লাগিয়েছি তার অবস্থা একেবারে খারাপ। ইঁদুরে পুরো মাঠের ধানের গাছ কেটে শেষ করে ফেলছে। যে যা বলছে সে মোতাবেক ওষুধ দিচ্ছি কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছেনা আবার পলিথিন বেধে দিয়েছি তাতেও ফল হচ্ছে না। যেভাবে গাছ হয়েছিল তাতে করে ধানের বাম্পার ফলন হতো কিন্তু যে হারে ইঁদুর ধান কাটছে তাতে করে আমরা আশাই ছেড়ে দিয়েছি কী হবে হোক।
একই গ্রামের কৃষক সুজন হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এবারে ধানক্ষেতে ব্যাপকভাবে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে স্বর্ণা ৫ জাতের ধানে এই ইঁদুরের আক্রমণ বেশী লক্ষ করা যাচ্ছে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকেও কোন পরামর্শ পাওয়া যাচ্ছেনা, এমনকি তারা মাঠ পরিদর্শনেও আসছেন না। ইঁদুর নিধনে যদি কৃষি অফিসের পরামর্শ পাওয়া যেত তাতে করে আমাদের কৃষকদের উপকার হতো। ইঁদুর যে হারে ধান কেটে নষ্ট করছে এতে করে এবারে ধান আবাদ করে লাভ তো দুরে থাকলো উৎপাদন খরচ উঠবে না।
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার শামীমা নাজনীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চলতি আমন মৌসুমে হাকিমপুর উপজেলায় ৮ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে আমনের চাষাবাদ হয়েছে, ফসলের বর্তমান অবস্থা ভালো। কোথাও কোথাও ধান ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ দেখা দিয়েছে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে বাঁশের তৈরি যে প্রচলিত ফাঁদ, বিষ-ফাঁদ, ধানের জমিতে কলাগাছ পুতে দেওয়া এতে করে জমিতে পেঁচা বসবে রাতের বেলা পেঁচা ইঁদুর ধরে খাবে, তাতে কিছুটা ইঁদুর নিয়ন্ত্রণ হবে।যেসব জমিতে ইঁদুর ইতোমধ্যেই ধান কেটে ফেলছে সেগুলো তো আর রিকভার হওয়ার সম্ভাবনা নেই তাতে করে ধানের কিছুটা ফলনের ওপর প্রভাব পড়বে।