আ.লীগের নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগ

বিএনপির ৫৯ নেতা-কর্মীসহ দুই শতাধিক ব্যক্তির নামে মামলা

লালমনিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনি ক্যাম্পে আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে বিএনপির দুই শতাধিক ব্যক্তির নামে সদর থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে জেলা বিএনপির কার্যকরী কমিটির সদস্য সাইদুল ইসলামকে (৫৪) মঙ্গলবার গভীর রাতে আটক করা হয়। পরে তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর (অপারেশন) নির্মল চন্দ্র রায় এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, তদন্তের পাশাপাশি অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশি চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে লালমনিরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দলীয় নির্বাচনি কার্যালয়ে ঢুকে কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার, ১টি কাঠের টেবিল, সাউন্ড বক্স, মাইক বাজানোর মেশিনসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ৫৯ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে আরও ১০০/১৫০জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বিলু বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। যার নম্বর-১১ (১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১)।

মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা শেষে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার পরে আমরা পাশের চায়ের দোকানে নাস্তা করতে যাই। কিছুক্ষণ পরেই শুনতে পাই অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই এবং বিষয়টি নেতৃবৃন্দকে অবগত করি। মামলা দিয়েছি। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, ‘ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মোশাররফ হোসেনের অনুগত নেতাকর্মী-সমর্থকেরা নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনি ক্যাম্পের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ মামলার আসামিদের গ্রেফতার দাবি করছি।’

সদর থানার ওসি শাহা আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পাই নৌকা প্রতীকের নির্বাচনি কার্যালয়ের আসবাবপত্র ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাতেই মামলা হয়েছে। ঘটনার আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সাইদুল ইসলাম নামে এজাহারভুক্ত এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’

বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোশাররফ হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ওরা (আওয়ামী লীগ) নিজেরাই ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের নেতাকর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে ওপর মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমরা পুলিশের নিরেপক্ষ তদন্ত দাবি করছি এবং আমার নির্বাচনে জড়িত নেতাকর্মীদের হয়রানি না করার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এদিকে, বিএনপির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী ওই ঘটনাটিকে একবোরেই সাজানো দাবি করে ফোনে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা রাত সাড়ে ৮টায় প্রচারণা শেষে পাশের একটি হোটেলে নাশতা খাওয়ার সময়ে আধাঘণ্টার মধ্যে যদি ঘটনাটি ঘটে তাহলে তারা তো ঘটনাস্থলের আশেপাশেই ছিলেন। সেসময়ে বিএনপির ৫৯ জন নেতা-কর্মীসহ দুইশ’জন এসে তাদের ক্যাম্প পুড়িয়ে দিলে তারা কি চুপ করে বসে থাকতেন? এতগুলো লোক যদি ওই ক্যাম্পে তখন হামলা ও ভাঙচুরের উদ্দেশ্যে যায় তাহলে তো বড় ধরনের সহিংসতাই হওয়ার কথা। কিন্তু, কিছু তো ঘটেনি। আসলে সেখানে কেউ যায়নি, নিজেরাই করেছে।