সৈয়দপুর পৌর নির্বাচন নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় আ.লীগ-জাপার পাল্টাপাল্টি মামলা

নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর নির্বাচন নিয়ে লাঙল ও নৌকার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় থানায় মামলা দুটি করা হয়।

জাতীয় পার্টির পক্ষে মামলা করেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ফয়সাল দিদার দিপু। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হিটলার চৌধুরী ভলুসহ অজ্ঞাত ৫০-৬০ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।

অপরদিকে, আওয়ামী লীগের পক্ষে মামলা করেন সৈয়দপুর পৌর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবু। তিনি জাতীয় পার্টির পৌর কমিটির সদস্য সচিব আলতাফ হোসেনসহ ৯ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেছেন। এতে আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

দিপুর মামলার এজাহারে জানা যায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে গোলাহাট উর্দুভাষী ক্যাম্পে নির্বাচনি পথসভা চলাকালে পরিকল্পিতভাবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা হিটলার চৌধুরী ভলুর নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন লাঙল মার্কার নেতাকর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। ভলুর নির্দেশে জাপা নেতাকর্মীদের প্রায় ২০-২৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। ভলু নিজে লাঙল মার্কার প্রার্থী সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিকের ছেলের মোটরসাইকেলে আগুন লাগান এবং অন্যরা দলের এক কর্মীর আরেকটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৪টি মোটরসাইকেল থানায় পুলিশের হেফাজতে আছে। এ ছাড়াও আরও ২টি মোটরসাইকেল নিখোঁজ রয়েছে। এ সময় প্রতিপক্ষের হামলায় ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী আহত হলে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বাবুর করা মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, শনিবার গোলাহাট ক্যাম্পে পথসভা করে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিদ্দিকুল আলম। ওই সভায় জাপা নেতা আলতাফ হোসেন ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি হিটলার চৌধুরী ভলুর বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য রাখেন। এতে স্থানীয় লোকজন বাধা দিলে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে হিটলার চৌধুরীর বাড়িতে ঢুকে জিপগাড়ি, আসবাবপত্র ও বঙ্গবন্ধুর ছবিযুক্ত দলীয় সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে।

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল হাসনাত খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘উভয়পক্ষের লিখিত এজাহার পেয়েছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) রাত ১১টায় নৌকা ও লাঙল মার্কার কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, সংঘর্ষ, মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ২১ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর ছবি অবমাননার অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

এদিকে, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) পৌর শহরে সংবাদ সম্মেলন করে।

এই পরিস্থিতিতে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সৈয়দপুরবাসী।