স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বর্জনের হুমকি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের

নীলফামারীর ডোমারে স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনে স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তান অংশ নিলে ওই অনুষ্ঠান বর্জনের হুমকি দিয়েছেন উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা। মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার ২৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি দেওয়া হয় জেলা প্রশাসকের কাছে। এর আগে তারা একইভাবে স্মারকলিপি দের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।

ডোমার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. তোফায়েল আহমেদকে স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তান দাবি করে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের জাতীয় পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি থেকে তাকে বিরত রাখার অনুরোধ জানানো হয় স্মারকলিপিতে। অন্যথায় ওই অনুষ্ঠান বর্জন করবেন বলে ঘোষণা দেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. নুরন নবী বলেন, ‘মো. তোফায়েল আহমেদ স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীর সন্তান। যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তার বাবা শওকত আলী সরকারের নাম রয়েছে। মহান স্বাধীনতা দিবসে একজন যুদ্ধাপরাধীর সন্তান জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে এটা আমাদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। ওই কর্মসূচি থেকে তাকে বিরত রাখার দাবি জানাচ্ছি আমরা। সেটি না হলে দিবসটির সরকারি কর্মসূচি বর্জন করে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে পৃথক কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমাদের দাবি উপেক্ষা করে তোফায়েল আহমেদ সরকারি কর্মসূচিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করায় আমরা ওই অনুষ্ঠান স্ব-পরিবারে বর্জন করি।’

তবে মো. তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে যে তালিকাটি প্রকাশিত হয়েছিল সেটি বিতর্কিত হওয়ায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই তালিকা স্থগিত হয়। আমাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এসব করা হচ্ছে। আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন। আমি ছাত্রলীগ থেকে বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি। আমরা তিন ভাই তিন বোন সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির জড়িত।’

জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের সম্মান দেওয়া আমাদের কর্তব্য। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা তাদের সম্মান জানাবো। ডোমার উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া স্মারকলিপি পেয়েছি। তাদের দেওয়া স্মারকলিপি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্মারকলিপি দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন ডোমার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার এম এ কবির, সাবেক সহকারী কমান্ডার গোলাম রব্বানী, ফারুক আলম প্রধান, রবিউল আলম রব্বী, বজলুল করিম বজু,  নুরল আশীন নূর, সহকারী কমান্ডার আমিনুর রহমান প্রমুখ।