ঘুঘু পাখির নিরাপত্তায় পুলিশি পাহারা!

নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ে অফিসার্স কলোনিতে প্রায় দুই একর জমির ওপর পুলিশ সুপার সিদ্দিকি তাঞ্জিলুর রহমানের বিশাল বাসভবন। ভবনের পুরো প্রাঙ্গণজুড়ে মনোরম লিচু বাগান। সেখানে ৩০টি ঘুঘু পাখি বাসা বেঁধেছে। ঘুঘু পাখির চরম শক্র তালুয়া পাখি। এজন্য ওই পাখি থেকে ঘুঘুর ডিম রক্ষার্থে বাসভবনে বসানো হয়েছে পুলিশি পাহারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের সামনে গোলঘর, গেট, লিচু বাগান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কুলারের সবখানে বাসা বেঁধেছে ঘুঘু পাখি। কিছু দিনের মধ্যে এসব পাখির ডিম দেওয়া শেষ হবে। আবার দু একটি বাসায় তা দেওয়া শুরু হয়েছে মা পাখির।

এসপি বাংলোর বিভিন্ন গাছে গড়া বাসায় ডিম পেড়েছে ঘুঘু পাখি বাগানের ভালো ফলন পেতে ও গাছের পরিচর্যায় সর্বদা ব্যস্ত থাকেন পুলিশ সুপার তাঞ্জিলুর রহমান। তিনি জানান, ভবনের ৩০টি স্থানে ঘুঘু পাখি বাসা বেঁধেছে। এ কারণে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে এসি ছাড়ছি না। পাখিগুলো যাতে নিরাপদে ডিম পাড়তে পারে, সেজন্য সবরকম ব্যবস্থা নিয়েছি। কলোনিতে অভিযোগ নিয়ে আসা দর্শনার্থীদের সঙ্গে গোলঘরে বসাও যাচ্ছে না। কেউ উচ্চস্বরে কথা বলছে না। লিচু বাগানে ফল এসেছে। এসময় কীটনাশক স্প্রে করতে হয়, কিন্তু আমি আমার লোকদের তাও করতে মানা করেছি।

পাখিপ্রেমী পুলিশ সুপার বলেন, ছেলেবেলায় এয়ারগান দিয়ে কত পাখি মেরেছি। অথচ এখন দেখুন পাখিদের জন্য মায়া হচ্ছে। ওদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পরিবারসহ কষ্ট করছি।

এসপি বাংলোর এসি মেশিনের ওপরে ঘুঘুর বাসা সিদ্দিকি তাঞ্জিলুর রহমান বলেন, ঘুঘু পাখির চরম শক্র হচ্ছে তালুয়া পাখি। ওই পাখি যাতে ঘুঘুর ডিম খেয়ে না ফেলে, সেজন্য বাসভবনে পুলিশ পাহারা বসিয়েছি। পালাক্রমে বিরামহীন খোঁজ রাখছেন তারা। আমি নিজেও এ নিয়ে তদারকি করছি। প্রচণ্ড গরমে কষ্ট পাচ্ছি, তাতে কী! আমার বাসভবন এখন ঘুঘু পাখির অভয়ারণ্য। এটা কি আনন্দের নয়? পরিবেশ রক্ষায় কাজ করে এসব পাখি। তাই এদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।

পাখি ও পরিবেশবাদী সংগঠন সেতুবন্ধনের সভাপতি আলমগীর হোসেন জানান, বিষয়টি আমরা জেনেছি। আমরা সার্বিকভাবে এসপি মহোদয়কে এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে চাই।