রাতারাতি মাজার!

দিনাজপুরের হিলিতে একরাতের মধ্যেই মাটি ফুঁড়ে কবর বের হয়েছে বলে কথা ছড়িয়ে পড়েছে। আর বাড়ির মালিক কথিত ওই কবরকে কেন্দ্র করে রাতারাতি মাজার গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে কবর ও মাজারের খবর ছড়িয়ে পড়লে তা দেখতে সাধারণ মানুষের ঢল পড়েছে। তবে স্থানীয়দের অনেকের দাবি, যে বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটেছে ওই বাড়ির এক নারী সদস্য কবিরাজি করেন, প্রচারের উদ্দেশ্যেই তিনি এমনটি করেছেন।

হিলির জালালপুর গ্রামে রবিউলের বাড়িতে শুক্রবার (৭ মে) সকালে মাজারের আবির্ভাব হয় বলে কথা ছড়িয়ে পড়ে। বাড়ির মালিকের দাবি, রাতে ওই স্থানে কোনও কিছু না থাকলেও, ঘুম থেকে ওঠে এমন দৃশ্য দেখতে পান ওই বাড়ির সদস্যরা। পরে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত শত শিশুসহ নারী পুরুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করেন।

মাজার দেখতে আসা স্থানীয় সিদ্দিক ও রুবেল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর জানতে পারি, আমাদের পাড়ায় নাকি মাজারের আবির্ভাব হয়েছে। এই কথা শুনে দেখতে এসেছি, বাড়িতে গিয়ে আমরা দেখেছি, সত্যিই একটি কবরের মতো মাজার তৈরি হয়ে আছে।

ওই বাড়ির মালিক রবিউলের মা রোকেয়া বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, 'প্রথম থেকেই এই স্থানে কেউ বাড়ি-ঘর করতে পারেনি, একবার এক সাঁওতাল বাড়ি করেও সেটি ভেঙে দিয়েছে। দীর্ঘদিন পরে আমরা সেই স্থানে নির্ভয়ে বাড়ি করেছি। এর পর থেকে বাড়ির ছেলে মেয়েদের নানা ধরনের সমস্যা হতে থাকে। এর মাঝে বাড়ির বাউন্ডারি দেওয়ার জন্য ইটের প্রাচীর তুলতে লাগলে এই ঘটনা ঘটে। ভোররাতে সেহরি খেয়ে শোয়ার সময় সেখানে কোনও কিছু ছিল না। তবে সকালে উঠে দেখি কবরের মতো হয়ে আছে। ঠিক কবরের মতো মাটি উঁচু হয়ে আছে, এর উপরে আশেক বাবুর মাজার লেখা রয়েছে। একটি এক টাকার কয়েন রয়েছে সেখানে। পরে আমরা সেটি লালকাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়েছি। এটি জানার পর থেকেই মানুষজন দেখতে ভিড় জমাচ্ছে।'

হিলির জালালপুর ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিনহাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, একরাতেই মাজারের আবির্ভাবের খবরটি আমার কানে এসেছে। সকাল থেকেই অনেক মানুষ সেটি দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন। তবে যে বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটেছে সেই বাড়ির গৃহবধূ আগে থেকেই কবিরাজি করতো। হয়তোবা বাড়তি সুবিধার জন্য এমন কোনও কিছুর সৃষ্টি করতে পারেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।