ঋণের টাকা দিতে না পেরে ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা

নীলফামারীতে ঋণের টাকা ফেরত দিতে না পেরে দাদন ব্যবসায়ীর চাপে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৩ জুন) বাড়ির পাশের একটি জিগা গাছ থেকে প্লাস্টিকের দড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় ব্যবসায়ী এন্তাজ আলীর (৫৫) লাশ উদ্ধার করা হয়। সদর থানার ওসি আব্দুর রউফ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এন্তাজ আলী সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালীপাড়া গ্রামের মৃত্যু আজগার আলীর ছেলে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের সিংদই ময়দান পাড়া গ্রামের মৃত্যু আজিমুদ্দিনের ছেলে দাদন ব্যবসায়ী হানিফ ইসলামের কাছ থেকে চড়া সুদে প্রথমে ৮ লাখ ৫৪ হাজার টাকা নিয়েছিলেন এন্তাজ। ওই টাকা দিয়ে ভুট্টার ব্যবসা শুরু করেন। তবে করোনাকালে লোকসানে পড়েন তিনি। পরে ওই লোকসান কাটিয়ে উঠতে একই কায়দায় ১১ লাখ টাকার ঋণ দেওয়া হয় এন্তাজকে।

এন্তাজ আলীর ছোট ছেলে ও ইউডি মামলার বাদী মাছুম বিল্ল্যা (২১) বলেন, দাদন ব্যবসায়ী কীভাবে আমার বাবাকে এত টাকা দিলেন, পরিবারের আমরা কেউ জানলাম না। ওই টাকা পরিশোধের জন্য বিভিন্নভাবে বাবাকে চাপ দিলে আমার বাবা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন। সুদ ব্যবসায়ী হানিফ ইসলামের আমি বিচার চাই।

ব্যবসায়ীর স্ত্রী মেজোয়ারা বেগম বলেন, মঙ্গলবার (২২ জুন) হানিফ লোকজন নিয়ে এসে আমার স্বামীকে টাকা পরিশোধের জন্য কঠিন চাপ দেন ও ভয়ভীতি দেখান। এ ঘটনায় আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন।

তিনি আরও জানান, হানিফ কৌশল আমার স্বামীর থেকে ৫১ শতাংশ জমি সাব দলিলসহ দুটি ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নিয়েছে। এসব কারণেও আমার স্বামী আত্মহত্যা করেন। আমি তার বিচার চাই।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, হানিফ অবৈধভাবে সুদের ব্যবসা করে গরিব মানুষকে হয়রানি করে আসছে। টাকা দিতে না পারলে নানা রকম চাপ সৃষ্টি করে। এছাড়া ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে সম্পত্তি দখলসহ মানসিকভাবে চাপ দিয়ে থাকেন। এলাকায় তার কুপ্রভাবে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে হানিফের মোবাইলফোনে (০১৭৪০৫৬৭...) একাধিকবার কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। ওই এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায়, এন্তাজের আত্মহত্যার খবর পেয়েই সে এলাকা ছেড়েছে।

বৃহস্পতিবার নীলফামারী সদর থানার ওসি আব্দুর রউফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের পর দাফনের জন্য তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি ইউডি মামলা হয়। মৃতের পরিবারের লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।