অর্থ আত্মসাতে শিক্ষার্থীদের ‘বাবা’ সাজা সেই প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের পিতা সাজার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার মাদারটারী পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবার রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শহীদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রধান শিক্ষক মাহবুবার রহমানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ জুন উপজেলা শিক্ষা অফিসার ও সহকারী শিক্ষা অফিসারের সমন্বয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে তারা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে ৩০ জুন তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।

তিনি জানান, পরে রংপুর বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. মুজাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ৩ (খ), (ঘ) ধারায় ওই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

শহীদুল ইসলাম বলেন, এখন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু হবে এবং আবারও একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হবে। তিনি সেই কমিটির কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন।

প্রসঙ্গত, শিক্ষক মাহবুবার রহমান শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে উপবৃত্তির তালিকার ৯১, ১২৮, ১২৯, ১৬৯, ১৭৪, ২১৫ নং ক্রমিকের শিক্ষার্থীদের বাবা এবং ৫৯ নং শিক্ষার্থীর চাচা হিসেবে নিজের নাম ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও ১০৪, ১৬৮, ২১২ নং শিক্ষার্থীর মা হিসেবে তার স্ত্রী সাবিনা বেগম, ১৩০ ও ১৩২ ক্রমিকের শিক্ষার্থীর ভাই এবং ০৭ নং ক্রমিকের শিক্ষার্থীর বাবা হিসেবে প্রধান শিক্ষকের ছেলে সাদেকুলের নাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের দুই শ্যালক মাইনুল ও মেহেদীকে কয়েকজন শিক্ষার্থীর ভাই, চাচা ও পিতা হিসেবে তালিকায় নাম দেখানো হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, কিট অ্যালাউন্সসহ ১৭ শিক্ষার্থীর নামে বরাদ্দ হওয়া প্রায় ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা নামে-বেনামে আত্মসাৎ করেছেন এ প্রধান শিক্ষক।

এ বিষয়ে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ দিলে এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ।