মিথ্যা তথ্যে দেশসেরা উদ্ভাবকের পুরস্কার নেওয়া শিক্ষা কর্মকর্তাকে বদলি

মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশসেরা উদ্ভাবকের পুরস্কার নেওয়া ও বিদ্যালয়ের কাজ না করে বিল উত্তোলনের জন্য ভুয়া বিল দাখিলের অভিযোগে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসান রনিকে বদলি করা হয়েছে। 

বুধবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাকে বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী। এর আগে রবিবার (২২ আগস্ট) মন্ত্রণালয় থেকে তাকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। হাকিমপুর উপজেলা থেকে সরিয়ে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় তাকে পদায়ন করা হয়েছে।

স্বপন কুমার রায় চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হাকিমপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসানকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। ৩১ আগস্টের মধ্যে তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার আমার কাছে রিলিজ অর্ডার চেয়েছেন। তাকে রিলিজ অর্ডার দিয়েছি। তার স্থানে নতুন কেউ এলে দায়িত্ব বুঝে নেবেন। আপাতত সিনিয়র সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দায়িত্বপালন করবেন।

প্রসঙ্গত, কাজ না করে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে ভুয়া বিল ভাউচার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া বিল দাখিলের অভিযোগ উঠে মাসুদুল হাসান রনির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। 

একই সঙ্গে করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকায় অনলাইনের মাধ্যমে হওয়া ক্লাসগুলো রেকর্ড করে মেমোরি কার্ডের মাধ্যমে সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার আইডিয়া দিয়ে দেশসেরা উদ্ভাবকের পুরস্কার নেন তিনি। যদিও উপজেলার কোনও স্কুলেই এমন কার্যক্রম চালু হয়নি, মেমোরি কার্ড দেওয়া হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সভাপতি, কর্তৃপক্ষসহ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।

উপজেলায় ৪৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। করোনাকালীন সময়ে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে শিক্ষা কর্মকর্তা মেমোরি কার্ডের মাধ্যমে বিশেষ পদ্ধতিতে পাঠদানের আইডিয়া উদ্ভাবন করেন। একই সঙ্গে ৯৫ ভাগ শিক্ষার্থীকে মেমোরি কার্ডের শিক্ষার আওতায় আনা হয়েছে দাবি করে তার আইডিয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠান। ওই আইডিয়ায় দেশসেরা উদ্ভাবকের পুরস্কার পান। যদিও সরেজমিনে, বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পাননি বাংলা ট্রিবিউন প্রতিনিধি।