টাকা চুরির অপবাদে মাকে পেটালেন ছেলে

তিন হাজার টাকা চুরির অভিযোগে মা-কে বেদম পিটিয়ে আহত করেছে ছে‌লে। ছে‌লের লা‌ঠির আঘা‌তে সৃষ্ট ক্ষত নি‌য়ে তিন দিন ধ‌রে হাসপাতা‌লে চি‌কিৎসাধীন র‌য়ে‌ছেন ভুক্ত‌ভোগী মা। ঘটনা‌টি ঘ‌টে‌ছে কু‌ড়িগ্রা‌মের উলিপুর উপ‌জেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের সরদার পাড়া গ্রা‌মে।

আহত মা মহ‌সিনা বেগম (৫০) কু‌ড়িগ্রাম জেনা‌রেল হাসপাতা‌লের ৬নং ওয়া‌র্ডে ভ‌র্তি র‌য়ে‌ছেন। ‘স্বামীর ইন্ধ‌নে পে‌টের সন্তান আমাকে আঘাত ক‌রে‌ছেন’ এমন অভিযোগ তু‌লে তি‌নি স্বামী ও সন্তা‌নের দৃষ্টান্তমূলক শা‌স্তি দা‌বি ক‌রে‌ছেন’।

অভিযুক্ত ছে‌লের নাম- আজিজুল হক মাসুদ (২১)। সে সরদারপাড়া গ্রা‌মের আব্দুল জ‌লি‌ল-মহ‌সিনা বেগম দম্প‌তির ছে‌লে।

হাসপাতা‌লে চি‌কিৎসাধীন মহসিনা বেগম জানান, গত মঙ্গলবার (৭ সে‌প্টেম্বর) রাতে তার ছোট ছেলে মাসুদ বাড়ি ফিরে তার ঘর থেকে তিন হাজার টাকা হারা‌নোর কথা জানায়। মা এ টাকা চুরি করেছেন বলে দাবি করে। এ সময় তার মা কোনও টাকা চুরি করেননি বলে দাবি করলে মা-‌ছে‌লের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এরপর সে পে‌ট্রোল ঢে‌লে বা‌ড়ি‌তে আগুন দি‌তেও উদ‌্যত হয়। এক পর্যায়ে রাত ১১টার দিকে মাসুদ গা‌ছের ডাল দিয়ে মা মহসিনা বেগমকে বেদম পেটাতে শুরু করে। পরে প্রতিবেশীরা এগি‌য়ে এসে মহসিনা বেগমকে উদ্ধার করে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর মহসিনা বেগমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) তাকে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা।

মহসিনা বেগম অভিযোগ করেন, বিষয়টি তার স্বামীকে (মাসু‌দের বাবা‌কে) জানানো হলে তিনি মাসুদকে ইন্ধন দি‌য়ে তার মা‌কে আঘাত করা‌কে ‘ঠিক কাজ করেছে’ বলে উল্লেখ করেন।

মহসিনা বেগমের শরীরের একাধিক স্থা‌নে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান ওই ওয়ার্ডের দা‌য়িত্বরত নার্স দুলালী খাতুন। তিনি আরও জানান, আঘাতের স্থানে রক্ত জমাট বেঁধে কালো হয়ে আছে। শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) নাগাদ তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হতে পা‌রে।

এ বিষয়ে জান‌তে মহ‌সিনা বেগ‌মের অভিযুক্ত ছে‌লে আজিজুল হক মাসুদের সঙ্গে মোবাইল ফো‌নে যোগা‌যোগ করা হ‌লে তি‌নি মা‌কে পেটা‌নোর বিষয়টি স্বীকার ক‌রেন। তিনি ব‌লেন, ‘রা‌গের মাথায় ‌ক‌য়েকটা মার দি‌য়ে‌ছি। ত‌বে আমার মা নিজ ইচ্ছায় হাসপাতা‌লে ভ‌র্তি হন‌নি।’ মা‌কে মে‌রে ভুল ক‌রে‌ছেন ব‌লেও জানান তি‌নি। তার মা টাকা চু‌রি ক‌রে‌ছেন, এর কোনও প্রমাণ তার কা‌ছে ছিল কি না- জবা‌বে ‘ব‌্যস্ত’ বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন মাসুদ।

মাসু‌দের বাবা বলেন, ‘আমি বা‌ড়ি‌তে ছিলাম না। এসে শু‌নি, আমার স্ত্রী প‌ড়ে গি‌য়ে আঘাত পে‌য়ে‌ছে।’ মাসু‌দের স্বীকা‌রো‌ক্তির বিষ‌য়ে জানা‌লে তি‌নি ব‌লেন, ‘আপনার সঙ্গে সাক্ষা‌তে কথা বল‌বো।’