শরতের নীলাভ আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা। ভেসে ভেসে কোথাও যেন তারা আটকে যাচ্ছে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই ভুল ভাঙবে, দেখা যাবে শ্বেতশুভ্র কাঞ্চনজঙ্ঘার। মেঘেরা ভেসে গিয়ে যেন কাঞ্চনের সঙ্গে জড়াজড়ি করে আছে। প্রতিবছর অক্টোবরে এমন রূপ মেলে ধরলেও এবার সেপ্টেম্বরেই দেখা দিয়েছে ভারতের সিকিম আর নেপাল সীমান্তে অবস্থিত পৃথিবীর তৃতীয় পর্বতশৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা। চোখ জুড়ানো সৌন্দর্য মেলে ধরে কাঞ্চন যেন দু’হাত বাড়িয়ে ডাকছে প্রকৃতিপ্রেমীদের।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) মেঘমুক্ত আকাশে ভোর থেকে তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এটি দৃশ্যমান হয়েছে। তবে তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো ও সীমান্তবর্তী মহানন্দা নদীর পাড় থেকে ভালোভাবে দেখা যায় কাঞ্চনের সৌন্দর্য।
এদিকে কাঞ্চনের অপরূপ সৌন্দর্য দেখা দেওয়ার খবরে তেঁতুলিয়ায় শুরু হয়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর কাঞ্চনজঙ্ঘা উঁকি দেয় পঞ্চগড়ে। মেঘমুক্ত আকাশে খালি চোখে কাঞ্চনকে দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছেন।
তেঁতুলিয়া ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার শাহিনুর রহমান শাহিন জানান তেঁতুলিয়ায় জেলা পরিষদের দুটি ডাকবাংলো রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পিকনিক কর্ণার এবং বেরং কমপ্লেক্ষ নামে দুটি আবাসন রয়েছে। এছাড়া উপজেলা সদরে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মহানন্দা কটেজ, কাজী ব্রাদার্স, সীমান্তের পাড়, দোয়েল আবাসিক হোটেলসহ বেশ কয়েকটি হোটেল গড়ে উঠেছে। আবাসিকে রাত্রিযাপন করতে চাইলে আগেভাগেই যোগাযোগ করে আসতে হবে। পর্যটকদের জন্য সকল ডাকবাংলো জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে বলেও জানান শাহিন।
এদিকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে আসা পর্যটকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পঞ্চগড় ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা ঘিরে তেঁতুলিয়ায় দৈনিক দুই থেকে পাঁচ হাজার পর্যটক আসেন। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে এসে পর্যটকরা যেন হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল টিম রয়েছে। আমরা নিরাপদ ভ্রমণে পর্যটকদের সবরকম সহযোগিতা করছি। কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে এখনও তেমন পর্যটক নেই। বিরুপ আবহাওয়া না থাকায় মূলত অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত এই পাঁচ মাস এখানে পর্যটকদের ভিড় থাকে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম জানান, তেঁতুলিয়া থেকে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ কাঞ্চনজঙ্ঘার চূড়া ও পর্বতমালা দেখা যায়। এবার আগেভাগেই দেখা দিয়েছে কাঞ্চন। পঞ্চগড় থেকে এটি খালি চোখে দেখা যাচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে পঞ্চগড়ে এসে কাঞ্চনজঙ্ঘার রূপ দেখার নিমন্ত্রণ জানান তিনি প্রকৃতিপ্রেমীদের।