প্রকল্প ছাড়াই টাকা উত্তোলন

১৮ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে ‘ক্ষমা’ চাইলেন চেয়ারম্যান

প্রকল্প গ্রহণ না করেই গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ভূমি হস্তান্তর কর বরাদ্দের উত্তোলনকৃত সাড়ে ১৮ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন ৩ নম্বর দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এজেডএম সাজেদুল ইসলাম স্বাধীন। 

শোকজ নোটিশের পর উন্নয়ন প্রকল্পে ইউনিয়ন পরিষদের ব্যাংক হিসাব নম্বরে এই টাকা জমা করা হয়। এ ছাড়া আয়কর বাবদ দুই লাখ ৪৯ হাজার টাকাও জমা করা হয়। একই সঙ্গে চেয়ারম্যান স্বাধীন তার শোকেজের জবাবে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন। 

রবিবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকসানা বেগম। তিনি বলেন, শোকজের লিখিত জবাব বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) আমার দফতরে জমা দেওয়া হয়। শোকজ জবাব গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রোখছানা বেগমের দফতরে পাঠিয়েছি। এ ছাড়া উত্তোলন করা সাড়ে ১৮ লাখ টাকা ও আয়করের আড়াই লাখ টাকা জমা দিয়েছেন চেয়ারম্যান।

শোকজের নোটিশ পাওয়ার পর গত ৩ অক্টোবর ভ্যাট-আয়কর বাবদ দুই লাখ ৪৯ হাজার ৯২৩ টাকা জমা ও ৬ অক্টোবর সাদুল্লাপুর উপজেলা প্রশাসনের ভূমি হস্তান্তর বরাদ্দের তুলে নেওয়া সাড়ে ১৮ লাখ টাকা পরিষদের ব্যাংক হিসাবে জমা করা হয়। এসব তথ্য নিশ্চিত করে পরিষদের সচিব মো. নুরজামান মিয়া বলেন, ‘সোনালী ব্যাংক সাদুল্লাপুর শাখার হিসাব নম্বরে এসব টাকা জমার রশিদ এবং ট্রেজারি চালানের কপি ইউএনওসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। লিখিত জবাবে চেয়ারম্যান অভিযোগের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন। 

সচিব আরও বলেন, ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় টিউবওয়েল, স্প্রে মেশিন বিতরণ ও কালভার্টসহ উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান কাজগুলোও হচ্ছে ভূমি হস্তান্তর কর বরাদ্দের টাকায়। এ কারণে জমা দেওয়ার ওই টাকা আবারও তুলে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
 
গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রোখছানা বেগম বলেন, চেয়ারম্যান স্বাধীনের লিখিত জবাব ইউএনও’র মাধ্যমে আমার কাছে পাঠানো হয়েছে। তার জবাব পর্যালোচনাসহ সরেজমিনে অভিযোগগুলো তদন্ত করেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

প্রকল্প ছাড়াই টাকা তুলে নেওয়ার খবর প্রকাশের পর জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষণিক ফেসবুক লাইভে এসে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান স্বাধীন নিজের দোষ আড়ালে নির্বাচনি প্রতিপক্ষ প্রার্থীসহ স্থানীয় দুই সংবাদকর্মীকে নিয়ে মিথ্যাচার করেন।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শনে নথিপত্র যাচাই ও ব্যাংক হিসাবে প্রকল্প গ্রহণ ছাড়াই সাড়ে ১৮ লাখ টাকা উত্তোলন এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরের আয়কর বাবদ দুই লাখ ৪৯ হাজার টাকা জমা না দেওয়ার ঘটনা ধরা পড়ে। 

এ ঘটনায় চেয়ারম্যানকে ২৯ সেপ্টেম্বর কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রোখছানা বেগম।