নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ২ সতিন, প্রথম স্ত্রীর পক্ষে স্বামী

তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের একই সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই সতিন। ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা।

প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী হলেন- উপজেলার চন্দ্রখানা বুদারবান্নি গ্ৰামের ফজলু মিয়া ওরফে ফজু কসাইয়ের প্রথম স্ত্রী আঙুর বেগম এবং তৃতীয় স্ত্রী জাহানারা বেগম। আঙুর বেগম কলম ও জাহানারা বেগম তালগাছ প্রতীকে নির্বাচন করছেন। আগামী ২৮ নভেম্বর ওই ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ হবে।

ত‌বে এ দুই স‌তিন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও স্বামী ফজলু মিয়া প্রথম স্ত্রীর পক্ষ নিয়েছেন। আঙুর বেগমের সমর্থনে দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমা বেগম‌কে সঙ্গে নি‌য়ে প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন ফজলু। এতে বিচলিত নন তৃতীয় স্ত্রী জাহানারা বেগম। স্বামী ও সতিনের সমর্থন না পেলেও একাই প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

জাহানারা বেগম বলেন, ‘২০১৭ সালের ইউপি নির্বাচনে স্বামীর সমর্থন নিয়েই আমি প্রার্থী হয়েছিলাম। সেবার ভোটের লড়াইয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলাম। সে ধারাবাহিকতায় এবারও জনগণের সমর্থন নি‌য়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কিন্তু সতিন প্রতি‌হিংসাবশত আমার স্বামীকে ফুসলিয়ে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বলা হ‌য়ে‌ছিল। কিন্তু আমার প্রতি জনগণের সমর্থনের কথা চিন্তা ক‌রে রাজি হইনি। আমার সতিনও আমার প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও জনগণ বিজয়ের মালা আমা‌কেই পরাবে ইনশাআল্লাহ!’

ফজলু মিয়ার দাবি, জাহানারার সঙ্গে তার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। সে (জাহানারা) তা‌কে তালাক দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে। 

‘স্থানীয়‌রা সভা ক‌রে প্রথম স্ত্রী আঙুর বেগম‌কে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনে অংশ নি‌তে বলায় তা‌কে আমিও সমর্থন দিয়েছি। আর তৃতীয় স্ত্রী জাহানারা আমার সঙ্গে থা‌কে না, তার নির্বাচনের বিষ‌য়ে আমার কোনও সমর্থনও নেই’ যোগ করেন ফজলু।

আঙ্গুর বেগম বলেন, ‘আমার নির্বাচন করার কোনও ইচ্ছাই ছিল না। ভোটাররা মিটিং ক‌রে আমা‌কে নির্বাচন করার দাবি জানা‌নোয় আমি অংশ নিয়েছি। আমার স্বামী ও অপর এক স‌তিন আমার সমর্থনে কাজ করছে। আশা করি, আমি বিজয়ী হ‌বো।’

স্থানীয়রা জানান, ফজলু মিয়ার তিন স্ত্রী। প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী‌কে নি‌য়ে সে এক বাড়িতে থাকলেও তৃতীয় স্ত্রী জাহানারা ফজলুর অন্য বাড়িতে থাকেন। ত‌বে জাহানারার সঙ্গে ফজলুর সম্পর্ক ভালো নেই।

আঙুর ও জাহানারাসহ ওই পদে মোট পাঁচ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনে একই পদে দুই সতিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে জনমনে কৌতুহল তৈরি হলেও বিষয়‌টি‌কে সেভাবে দেখ‌তে রাজি নয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ম‌মিনুর আলম বলেন, ‘তা‌দের পারিবারিক কোনও বিষয়‌ এতে জড়িত আছে কি-না সেটা আমা‌দের বিবেচ্য নয়। নেতৃত্ব সৃষ্টিতে নারীরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, আমরা এটা‌কে সাধুবাদ জানাই।’