ইউপি নির্বাচন: সংখ্যালঘুদের হুমকি দিয়ে চার গ্রামে লিফলেট

৩১ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এলাকায় লিফলেট সাঁটিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। এতে এলাকার চারটি গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

জনসাধারণের দাবি, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা ভোট দিতে যাবেন না।

ঘটনাটির তদন্তে সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বিকালে সদর উপজেলার ১নং চেহেলগাজী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বানপাড়া, মালিয়াপাড়া, নদীয়াপাড়া, আদিবাসীপাড়ায় পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন পরিদর্শন করেছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা জনগণকে আশ্বস্ত করেছেন, ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

সোমবার বিকাল ৪টার দিকে এলাকা পরিদর্শন করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মর্তুজা আল মুঈদ। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদ সরকার, কোতয়ালী থানার ওসি মোজাফফর হোসেন স্থানীয়দের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।

পোস্টারের পাশাপাশি গ্রামের বিভিন্ন রাস্তায় হুমকি দেওয়া লিফলেটও ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ওই ইউনিয়নের কর্নাই গ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা হয়েছিল। জানা গেছে ওই এলাকার ভোটার প্রায় তিন হাজার।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মতুর্জা আল মুঈদ বলেন, আমরা এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের আশ্বস্ত করেছি। পুলিশ ও প্রশাসন তাদের পাশে রয়েছে।

কোতয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের বের করতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে সেজন্য তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।

জানা যায়, রবিবার দিবাগত রাতে ওই ইউনিয়নের বানপাড়া, মালিয়াপাড়া, নদীয়াপাড়া, আদিবাসীপাড়ায় দুর্গা মন্দির, গাছে, বাড়ির দেয়ালে, দুষ্কৃতকারীরা হুমকি দিয়ে লিফলেট সাঁটিয়ে দিয়ে যায়।

এলাকার গঙ্গাধর রায় বলেন, সকালে ছেলের কাছে এই পোস্টার সম্পর্কে জানতে পারি। আমাদের সম্প্রদায়ের ওপর এটা বড় হুমকি। আমরা নিরাপত্তা চাই। বিষয়টির সমাধান না হলে ভোটকেন্দ্রে যাবো না।

সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ভোটের আগেই এমন চিঠি। ভোটের পরে কী হবে!’

ওই এলাকার সংরক্ষিত ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী স্বপ্না রানী বলেন, এর আগেও আমরা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই এক হয়ে থেকেছি। এই ওয়ার্ডের ভোটারদের আতঙ্কিত করতেই এ কাজ করা হয়েছে। ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সেমাজ উদ্দীন বলেন, এই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হোক।

অপর মেম্বার প্রার্থী মোকছেদ আলী বলেন, ঘটনাটি জানার পরপরই আমি পুলিশকে জানিয়েছি। ভোটাররা যাতে আতঙ্কিত না হন। আমরা তাদের পাশে আছি।