বগুড়া আ’লীগের প্রাথমিক সদস্যও নন রূপা

ঢাকায় হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া মাহবুবা নাসরীন রূপা বগুড়ায় আওয়ামী লীগের কোনও কমিটির প্রাথমিক সদস্য নন। তারপরও কীভাবে তিনি একইসঙ্গে জেলা ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য হলেন তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এ ব্যাপারে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা সদুত্তর দিতে পারছেন না।

রূপাকে জেলার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পর সোমবার দুপচাঁচিয়া উপজেলার নির্বাহী সদস্যের পদ থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আল রাজি জুয়েল ও অন্যরা জানান, সংগঠনের নির্বাহী কমিটিতে পদ পেতে প্রাথমিক সদস্য হতে হয়। কিন্তু ছাত্রলীগ ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরীন রূপা বগুড়ায় আওয়ামী লীগের কোনও কমিটির প্রাথমিক সদস্য নন।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের ১১ মাসের মাথায় গত ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর কেন্দ্র থেকে ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এখানে নির্বাহী সদস্য পদে রূপা ও আরও অনেক ‘হাইব্রিড’ নেতাকে রাখায় অবাক হন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

রবিবার দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুর রহমানের কাছে রূপার দলীয় পদ-পদবী সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন রূপা তার সংগঠনের প্রাথমিক সদস্যও নন। অথচ সোমবার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত সংবাদে ঢাকায় সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ও জালিয়াতি চক্রে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবা নাসরীন রূপার জড়িত থাকার বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। তার এহেন কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় মাহবুবা নাসরীন রূপাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।’

এ প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক দাবি করেন, রূপা তাদের সংগঠনের নির্বাহী সদস্য ছিলেন।

তা হলে সভাপতি অস্বীকার করলেন কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘হয়তো ভয়ে প্রকাশ করেননি।’

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আল রাজি জুয়েল জানান, তার জানামতে ১১ সদস্য বিশিষ্ট দুপচাঁচিয়া উপজেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানে রূপাকে নির্বাহী সদস্য করা হয়। একই ব্যক্তি জেলা ও উপজেলা কমিটির একই পদ পেতে পারেন কি না জানতে চাইলে, আল রাজি জুয়েল সদুত্তর দিতে পারেননি।

তিনি বলেন, রূপা কীভাবে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতার পদ পেলো তা তার জানা নেই।

তবে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ও উপজেলার আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, রাজনীতিতে রূপার হাত অনেক লম্বা। তিনি জেলা ও উপজেলা নেতাদের অবজ্ঞা করে চলতেন। অজ্ঞাত শক্তির জোরে ইচ্ছামতো পদ-পদবি নিয়েছেন।