নিজ ছেলের ধর্ষণের শিকার গৃহপরিচারিকাকে অন্যত্র বিয়ে দিলেন প্রধান শিক্ষিকা

নিজ ছেলের ধর্ষণের শিকার গৃহপরিচারিকাকে অন্যত্র বিয়ে দিয়েছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভুতিপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাসিমা আক্তার। আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ভঙ্গ করে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে সাত কার্যদিবসের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন পঞ্চগড়ের আদালত। গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ আদেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি আজিজার রহমান আজু।

তিনি বলেন, 'এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছিল ভুক্তভোগীর পরিবার। বিষয়টি এতদিন গোপন ছিল, প্রধান শিক্ষিকা ও তার ছেলের বিরুদ্ধে পুলিশ আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়ার পর বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সাত কার্যদিবসের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।'

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ওই কিশোরী (১৩) প্রধান শিক্ষিকা নাসিমা আক্তারের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতো। পাশাপাশি তার বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়তো। একপর্যায়ে নাসিমা আক্তারের ছেলে নাহিদ হাসান তানভীর বিয়ের কথা বলে ওই ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। গত ৮ আগস্ট বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে তানভীর। ঘটনা জানাজানি হলে ছাত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন নাসিমা আক্তার।

গত ১৩ আগস্ট কিশোরীর মা বাদী হয়ে নাসিমা আক্তার ও তার ছেলে তানভীরের বিরুদ্ধে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে মামলার চার্জশিট দেয়। পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল চার্জশিট গ্রহণ করেন।

এরই মধ্যে মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে কিশোরীকে অন্যত্র বাল্যবিয়ে দেন প্রধান শিক্ষিকা। সেই সঙ্গে বাদীর সঙ্গে আপস-মীমাংসা হয়েছে মর্মে আদালতকে জানান তিনি। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেন। 

পঞ্চগড় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, 'রবিবার আদালতের আদেশের কপি হাতে পেয়েছি। সোমবার রংপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উপ-পরিচালকের কাছে আদালতের আদেশের কপি পাঠিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'