মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে আসা শাশুড়িরও মাথা ফাটালেন জামাই

যৌতুকের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে পেটাতে ছিলেন খাদিমুল ইসলাম। মেয়ের ওপর নির্যাতন সইতে না পেরে এগিয়ে যান শাশুড়ি এছমা বেগম। ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেও পেটান জামাই খাদিমুল। আঘাতে মাথা ফেটে যায় এছমা বেগমের। স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বৃহস্পতিবার (৫ মে) বিকালে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোঘলবাসা ইউনিয়নের চর সিতাইঝাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ খবর পেয়ে অভিযুক্ত জামাই খাদিমুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ভুক্তভোগী এছমা বেগম এবং তার মেয়ে লিপির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে সদর উপজেলার চর সিতাইঝারের বাসিন্দা মৃত খবির উদ্দিনের ছেলে খাদিমুল ইসলামের সঙ্গে লিপির বিয়ে হয়। বিয়ের পর খাদিমুলকে যৌতুক হিসেবে দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়। এর এক বছর পর আরও এক লাখ টাকা এবং একটি মোটরসাইকেলের জন্য লিপি ও তার পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন খাদিমুল। যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে লিপির ওপর শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এরপর স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গত ২৯ মার্চ লিপি একই গ্রামে তার বাবার বাড়িতে চলে আসেন। বৃহস্পতিবার খাদিমুল তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে আবারও লিপি বেগমকে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন এবং একপর্যায়ে কাঠের লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। এ সময় এছমা বেগম মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করেন খাদিমুল। এতে এছমা বেগমের মাথা ফেটে যায়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এছমা বেগম বলেন, ‘আমার ও আমার মেয়ের ওপর এই নির্যাতনের বিচার চাই।’

লিপি বেগম বলেন, ‘আমার ছোট একটি ছেলে সন্তান আছে। তারপরও আমাকে যেভাবে নির্যাতন করে তাতে আমি আর সহ্য করতে পারছি না। বাবার বাড়িতেও আমি নিরাপদ নই। সে আমার মাকেও ছাড় দেয়নি। আমি খাদিমুলের বিচার চাই।’

এদিকে, এ ঘটনায় এছমা বেগমের ছেলে ও গৃহবধূ লিপির ভাই নাজমুল হক বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় যৌতুক ও নারী নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘অভিযুক্ত আসামি খাদিমুলকে বৃহস্পতিবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’