ঈদে ঘুরতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রবেশ ফি ২০ টাকা

ঠাকুরগাঁওয়ে জনসাধারণের বিনোদন কেন্দ্রের অপ্রতুলতার সুযোগ নিয়ে অভিনব ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঈদ বা কোনও ছুটির দিনে সাধারণ মানুষ ভিড় জমান জেলার হরিপুরের চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশস্ত মাঠে। তবে সেই মাঠে প্রবেশে এখন ২০ টাকা প্রবেশমূল্য দিতে হচ্ছে ঘুরতে আসা মানুষকে। এটা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় বিব্রতকর অবস্থায় আছেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

উপজেলাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১২ জুলাই) হরিপুর চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মূল ফটক তালাবন্ধ। বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষের পাশেই রয়েছে ছোট্ট একটি প্রবেশপথ। টিকিট হাতে বসে আছেন এক আনসার সদস্য। বিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্যে প্রতিজনের থেকে ২০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে টিকিট।
 
টিকিট ব্যবস্থার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা আনসার সদস্য দর্শন বলেন, চরভিটার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এরফান আলী আমাকে টিকিট বিক্রি করতে বলেছেন।

জানা গেছে, চরভিটা বিদ্যালয়ের মাঠটি বেশ দৃষ্টিনন্দনভাবে সাজানো। পার্কের মতো সৌন্দর্যের কারণে আশপাশের মানুষ সেখানে ঘুরতে আসেন। উপজেলায় তেমন বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় ঈদ বা উৎসবের দিন প্রচুর মানুষ চরভিটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভিড় করেন। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অর্থ আয়ের চিন্তা থেকে প্রধান শিক্ষক টিকিটের ব্যবস্থা করেছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
 
চরভিটা বিদ্যালয়ে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এতদিন আমরা শুনে এসেছি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিক জনসাধারণ। অথচ মালিকদেরই প্রবেশের জন্য টিকিট সিস্টেম? 

দারাজ উদ্দিন ও চামেলি বেগম বলেন, আমাদের এখানে ঘোরাঘুরি তেমন জায়গা নেই। কিন্তু বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রবেশ করতে ২০ টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হয়েছে, যা দুঃখজনক।
 
চরভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এরফান আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে ২০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ঈদের দিন ২০ টাকা মূল্যে ২০০ টিকিট বিক্রি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঈদের তিন দিন পর্যন্ত বিদ্যালয় পরিদর্শনের ব্যবস্থা রাখার চিন্তাভাবনা আছে। দর্শনার্থীদের চাহিদা বিবেচনায় দিন বাড়ানো হতে পারে। 

হরিপুর উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার এম.এ.এস রবিউল ইসলাম বলেন, সরকারি বিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য কোনও প্রকার টিকিট বিক্রি করতে পারবে না। কী কারণে প্রধান শিক্ষক টিকিট বিক্রি করছেন, তা ঠিক বুঝতে পারছি না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি ঠিক জানা ছিল না। হরিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।