কুড়িগ্রামে শিডিউল ছাড়াই লোডশেডিং, বিপাকে মানুষজন 

জ্বালানি সাশ্রয় ও উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সারা দেশের মতো কুড়িগ্রামেও লোডশেডিং চলছে। তবে প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গড়ে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। কোনও শিডিউল মানা হচ্ছে না। এতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মানুষজন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন তারা।

স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কমে যাওয়ায় এবং একেক সময় একেক পরিমাণ বরাদ্দ পাওয়ায় নির্দিষ্ট রুটিনে তারা লোডশেডিং দিতে পারছেন না। ফলে প্রতিদিন গড়ে ফিডার প্রতি তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম শহরের কলেজ মোড়ের একটি ওয়েলডিং ওয়ার্কশপের ব্যবসায়ী ওয়াজেদ জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর দোকান খুলেছেন। খোলার পর বিকাল ৩টা পর্যন্ত দুই দফায় লোডশেডিং হয়েছে। সারাদিনে যে কর্মঘণ্টা তাতে এভাবে লোডশেডিং চলতে থাকলে তার ব্যবসা গুটিয়ে পথে বসতে হবে।

ওয়াজেদ বলেন, ‘আমাদের ব্যবসা পুরোটাই বিদ্যুৎনির্ভর। বিদ্যুৎ না থাকলে উৎপাদন করতে পারি না। সারাদিনে যে কাজ হচ্ছে তাতে কর্মচারীদের হাজিরার টাকাও দিতে পারছি না। এ সমস্যা দ্রুত নিরসন না হলে আমাদের পথে বসতে হবে।’

কুড়িগ্রাম শহরের এক ফার্নিচার ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সরকারের কথায় আর কাজে কোনও মিল পাচ্ছি না। এক ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের কথা বলে এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং দিচ্ছে। আমাদের কাজের যন্ত্রপাতি সব বিদ্যুৎনির্ভর। বিদ্যুৎ না থাকলে কর্মচারীদের বসে থাকতে হয়। আমরা ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’

নর্দার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো), কুড়িগ্রাম কার্যালয় জানায়, কুড়িগ্রাম শহরে নেসকোর আওতাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহ অঞ্চলকে ছয়টি ফিডারে ভাগ করা হয়েছে। ছয় ফিডারে বিদ্যুতের চাহিদা ১২ মেগাওয়াট। চাহিদার বিপরীতে নেসকো আট মেগাওয়াট বরাদ্দ পেতো। কিন্তু সরকারের জ্বালানি সাশ্রয় নীতির কারণে সেই বরাদ্দ কমিয়ে পাঁচ থেকে সাত মেগাওয়াট করা হয়েছে। ফলে ঘাটতি পূরণে তারা লোডশেডিং দিতে বাধ্য হচ্ছেন।  

নেসকোর কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী আলিমুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘লোডশেডিং দেওয়ার নির্দেশনার পর আমাদের বরাদ্দ কমানো হয়েছে। তবে সেটি নির্দিষ্ট নয়। একেক দিন একেক রকম বরাদ্দ পাচ্ছি। আমরা যখন যে রকম বরাদ্দ পাচ্ছি সে রকম সরবরাহ করছি। ফলে নির্দিষ্ট রুটিন করে লোডশেডিং দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে প্রতিদিন তিন থেকে চার আবার কখনও পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।’

/এএম/