ভুয়া কাবিনে ১৮ মাস সংসার, প্রতিবন্ধীর টাকা নিয়ে উধাও যুবক 

ঠাকুরগাঁওয়ে ভুয়া কাবিনে ১৮ মাস এক সঙ্গে সংসার করার পর প্রতিবন্ধী স্ত্রীর অর্থ লোপাট করে উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে রেজাউল করিম নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া থানাধীন মধুপুর গ্রামে। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) রুহিয়া থানায় এ ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন মধুপুর গ্রামের শ্রবণ প্রতিবন্ধী নারী রিনা আক্তার। রিনা ওই গ্রামের আ. খালেকের মেয়ে। অভিযুক্ত রেজাউল একই গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিকের ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পিতামাতা হারিয়ে একটি ছোট ঝুপড়ি ঘরের বাড়িতে একাই বসবাস করতেন রিনা। কোনও নিকট আত্মীয় না থাকায় প্রতিবেশীরাই তার দেখাশোনা করতেন। হঠাৎ কিছুদিন ধরে গ্রামের যুবক রেজাউলের যাতায়াত শুরু হয় রিনার ঘরে। কারণ জানতে চাইলে বিয়ে হয়েছে বলে জানান রিনা আক্তার। প্রমাণ স্বরূপ একটি কাবিননামাও বের করে দেখান রেজাউল। ১৮ মাস ধরে এভাবেই চলছিল। এতিম ও প্রতিবন্ধী নারীর সংসার গড়ে ওঠায় খুশি হয়েছিলেন প্রতিবেশীরাও।

তবে সম্প্রতি কান্নাকাটির আওয়াজ শুনে রিনার ঘরে যান প্রতিবেশীরা। খোঁজ  নিয়ে তারা জানতে পারেন বন্ধুদের সহায়তায় একটি নাটকীয় বিয়ের আয়োজন করে রেজাউল। সহজ সরল রিনাকে বিশ্বাস জোগায় বিয়ের বিষয়ে। বন্ধুর কম্পিউটার কম্পোজের দোকান থেকে ভুয়া কাবিননামা বানিয়ে তা সবাইকে দেখায় সে। 

পরে ১৮ মাস সংসারের এক পর্যায়ে রিনার নিকট গচ্ছিত ৩০ হাজার টাকা ও রিনার নামে আশা (এনজিও) থেকে ৪০ হাজার টাকার লোন তোলেন রেজাউল। বাড়ি মেরামতের নামে সেই ৭০ হাজার টাকা নিলেও, আর ফিরে আসেননি তিনি।  

রিনা আক্তার বলেন, এখন আমার স্বামী আমাকে অস্বীকার করছে। তাকে আর খুঁজে পাচ্ছি না। জানতে পারি আমার স্বামী এর আগেও চারটি বিয়ে সাজিয়ে একইভাবে টাকা পয়সা নিয়ে ধোঁকা দিয়েছে। আমি এই লম্পট ও ধোঁকাবাজের বিচার চাই। তাই থানায় একটি অভিযোগ করেছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শাজাহান আলী বলেন, রিনা আক্তার আমার কাছে অভিযোগ করেছে। পরে আমি সেটা যাচাই করে দেখি আসলেই ভুয়া কাবিন দেখিয়ে রিনার সঙ্গে সংসার করছিল রেজাউল। আর এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে রেজাউল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। তারপর আমি রিনাকে থানায় অভিযোগের পরামর্শ দেই। 

এই বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত রেজাউল করিমের খোঁজ করা হলেও পাওয়া যায়নি। এমনকি তার পরিবারের সদস্যরাও এই বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।

অভিযোগ দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রুহিয়া থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।