মায়ের চেয়ে ৩ বছরের বড় ছেলে

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পূর্ব দামোদরপুরের গ্রামের বাসিন্দা জোবেদা বেগম। বয়স ৯০ ছুঁইছুঁই। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল তথ্যে তিনি তার ছেলের চেয়েও তিন বছরের ছোট হয়ে গেছেন। আর এতে বাতিল হয়েছে তার বয়স্কভাতার কার্ড। শেষ জীবনে এখন দুঃখ-কষ্টে দিন কাটছে তার।

এনআইডিতে দেখানো হয়েছে মায়ের চেয়ে তিন বছরের বড় তার ছেলে। আর আরেক ছেলে মায়ের বয়সের চেয়ে মাত্র এক বছরের ছোট।

জানা যায়, পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের শতবর্ষী মৃত গোলজার হোসেন চৌকিদার কয়েক বছর আগে মারা যান। এরপর তার নামের বয়স্কভাতার কার্ডটি বরাদ্দ পান তার স্ত্রী জোবেদা বেগম। বছর পাঁচেক ভাতার অর্থ তোলেন তিনি। তবে চলতি বছরে অনলাইন ডাটাবেজ করার সময় এনআইডিতে বয়স কম থাকায় বাতিল হয় তার ভাতার কার্ড। সেই থেকে জোবেদা বেগমের ভোগান্তির শুরু।  

জাতীয় পরিচয়পত্রে বৃদ্ধা জোবেদা বেগমের জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ১০ মার্চ, ১৯৬৫। তার বড় ছেলের জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ৫ এপ্রিল ১৯৬২। সে অনুযায়ী ছেলে আব্দুল জোব্বার তার মায়ের চেয়ে প্রায় তিন বছরের বড়। তা ছাড়া আরেক ছেলে জয়নাল মিয়ার জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ১৩ জুন, ১৯৬৬। সে অনুযায়ী মায়ের চেয়ে ছেলে জয়নাল এক বছর তিন মাসের ছোট।

বয়সের এমন পার্থক্য সংশোধন করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন জোবেদা বেগম।  নানা কাগজপত্র জমা দেওয়াসহ নানা ধরনের ভোগান্তি পেহাতে হচ্ছে তাকে। 

এ নিয়ে বৃদ্ধা জোবেদা বেগম বলেন, ‘মোর বয়স প্রায় একশ’ হবার নাগছে। কখন মরমু তার ঠিক নাই। মোর কার্ডখেন করি দেও ফির। মুই আর কিচ্চু চাম না।’

জোবেদার চেয়ে তিন বছরের বড় ছেলে জোব্বার বলেন, ‘মোর এ-তো বয়স ৬০ হইছে। মার বয়স ৯০ হলেও কার্ড এ ভুল করে ৫৬ বানাইছে। এটা কোনও কথা। এর জন্যি মার ভাতার কার্ডটাও বাতিল হইছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দৌঁড়ঝাপ করছি ম্যালা, এ কাগজ চায় ও কাগজ চায়। সেগলে কোনঠে পামো। তাই মার বয়স ঠিক করবের পাই নেই।’

সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, ‘প্রথম দিকে ২০০৮ সালের ডাটা এন্ট্রিতে এমনটা হতে পারে। তবে সংশোধনীর আবেদন করলে বয়স ঠিক করা যাবে।’

বিষয়টি নিয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মানিক রায় বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্রে নির্ধারিত বয়সের কম হওয়ায় অনলাইনে ডাটা না নেওয়ায় তার বয়স্কভাতার কার্ডটি বাতিল হয়েছে। এনআইডি সংশোধন হলে পুনরায় তার ভাতার কার্ড ইস্যু করা হবে।’