সম্মানীর ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান, অভিযোগ মেম্বারদের

দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১ নম্বর মরিচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলালের বিরুদ্ধে ১১ জন সাবেক ইউপি সদস্যের সম্মানীর অর্থ আত্মসাৎ ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান ও সাবেক ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন তারা।

শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাবেক ইউপি সদস্যরা এই অভিযোগ করেন। তাদের দাবি, ৫০ মাসের সম্মানীর মোট ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মরিচা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মোজাম্মেল হক। এ সময় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য কাবিরুল ইসলাম, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মফিজুল হক ও সংরক্ষিত ৩ আসনের সাবেক সদস্য নন্দীতা রানী রায় উপস্থিত ছিলেন।

দিনাজপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন ১১ জন সাবেক ইউপি সদস্য

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের ১১ জন ইউপি সদস্যের সম্মানী ভাতা প্রদান করা হয়নি। ৫০ মাসে প্রত্যেক ইউপি সদস্যের সম্মানী ভাতা দুই লাখ ২০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে ১১ জনের ৫০ মাসের সম্মানী ভাতা ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। এই টাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলাল আত্মসাৎ করেছেন। সম্মানীর বকেয়া টাকা চাইতে হেলে টালবাহানা এমনকি বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‌‘আমি আওয়ামী লীগ দলীয় ইউপি চেয়ারম্যান। মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে জেল খাটাবো’।

এ ঘটনায় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সংরক্ষিত আসনের সাবেক সদস্য নন্দিতা রানী রায় বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রে আমলী (বীরগঞ্জ ও কাহারোল) আদালতে চেয়ারম্যান হেলাল ও সাবেক ইউপি সচিব তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে সাবেক ১১ ইউপি সদস্যকে। আদালতের বিচারক মনিরুজ্জামান সরকার বিষয়টি তদন্ত করে আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বীরগঞ্জের ইউএনওকে নির্দেশ দিয়েছেন।

ইউপি চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম চৌধুরী হেলাল বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের ফান্ডে টাকা না থাকায় তাদের সম্মানীর টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রতি বছর সরকারি ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদে দুটি অডিট করা হয়। আমি যদি তাদের টাকা আত্মসাৎ করতাম তাহলে অডিটে ধরা পড়তো। আমি চেয়ারম্যান হিসেবেও তো আড়াই লাখ টাকা পাবো। করোনার কারণে গত দুই বছর আমাদের ট্যাক্সসহ বিভিন্ন খাত থেকে আয় কম হয়েছে। আমার খাতাপত্র দেখে তদন্ত করলেই সব জানা যাবে।’

বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (এইউনও) জিনাত রেহানা বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে বীরগঞ্জের ইউএনও হিসেবে যোগদান করেছি। কয়েকদিন আগে সাবেক ইউপি সদস্যরা আমার কাছে এসেছিলেন। সে সময় আমাকে আদালতে একটি মামলা করার বিষয়টি জানান। একই সঙ্গে আদালত থেকে আমাকে তদন্তের নির্দেশের বিষয়ে জানান। কিন্তু আমি এখন পর্যন্ত আদালতের কোনও কাগজ পাইনি। কাগজ হাতে পেলে নির্দেশনা মোতাবেক তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবো।’